Bhabadighi

মিনার রক্ষায় প্রশাসনের দ্বারস্থ ভাবাদিঘি

গ্রামবাসীর অভিযোগ, মিনারের কাছে গভীর গর্ত করে ওই নির্মাণকাজের জন্য ইতিহাস ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।  এলাকার পরিবেশও নষ্ট হতে পারে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share:

এ ভাবেই মিনারের পাশে নির্মাণ কাজ চলছে। গোঘাটের গির্জাতলায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

দিঘি বাঁচানোর আন্দোলনের জেরে প্রস্তাবিত রেলপথ নির্মাণ থমকে আছে এখনও। এ বার গ্রাম সংলগ্ন এলাকার ইতিহাস এবং সংলগ্ন পরিবেশ রক্ষায় ব্লক এবং মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন গোঘাটের ভাবাদিঘির মানুষ।

Advertisement

ইতিহাস বলতে একটি ‘সিমাফোর টাওয়ার’। ভাবাদিঘি এবং পাশের নবাসন গ্রামের সংযোগস্থলে ওই মিনারটি বংশাংনুক্রমে ‘গির্জা’ বলে থাকেন এলাকার মানুষ। জায়গাটি গির্জাতলা নামেই পরিচিত। দু’টি গ্রামে ঢোকারই সেটাই প্রবেশপথ। সেই স্তম্ভের গায়েই একটি নির্মাণ কাজ চলছে জানিয়ে গ্রামের ৬১ জন গণস্বাক্ষর করে তা বন্ধের আর্জি জানিয়েছেন মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ এবং গোঘাট-১ ব্লকের বিডিও সুরশ্রী পালের কাছে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, মিনারের কাছে গভীর গর্ত করে ওই নির্মাণকাজের জন্য ইতিহাস ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এলাকার পরিবেশও নষ্ট হতে পারে। প্রচুর টিয়া পাখির বাস সেখানে। অভিযোগকারীদের অন্যতম তথা ‘ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটি’র সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, “ভাবাদিঘি রেল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশিষ্ট মানুষদের আনাগোনায় জেনেছি, মিনারটি আসলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৈরি সিমাফোর টাওয়ার। সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য প্রতি ৮ মাইল অন্তর একশো ফুট উচ্চতার স্তম্ভগুলি নির্মাণ করা হয়। এই পুরাকীর্তি ভেঙে যাতে ধ্বংস না হয়, তাই সংরক্ষণের জন্য আবেদন করেছি।”

Advertisement

গ্রামবাসীর ক্ষোভের কথা জানতে পেরে শুক্রবারই গোঘাট পঞ্চায়েত থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। মহকুমা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি বিডিওকে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করতে হয়েছে। বিডিও সুরশ্রী পাল বলেন, “ওই স্তম্ভের পাশে নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট পাঠাব।”

যাঁর বিরুদ্ধে ওই নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে, সেই ব্যবসায়ী সুব্রত টাট বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামে একটি ডায়গনস্টিক সেন্টার করার পরিকল্পনা করেই গোঘাট পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। স্তম্ভ থেকে অন্তত তিন মিটার তফাতে আপাতত একটি নিকাশি নালা এবং প্রাচীর নির্মাণ হচ্ছে। এতে স্তম্ভের কেন ক্ষতি হবে! গ্রামবাসীর নিকাশি নিয়ে যে অভিযোগ ছিল, তার সুরাহা করতে আমরা পাকা নিকাশি নালাও করে দিচ্ছি।”

পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প এবং সেইমতো ফি জমা পড়েছে পঞ্চায়েতে। কিন্তু এখনও কোনও নির্মাণ কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তদন্ত করে দু’মাসের মধ্যে অনুমতি দেওয়ার কথা। তার আগে কেন কাজ শুরু করা হয়েছে সেই সংক্রান্ত নোটিস দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন