অভিযোগ জানতে গ্রামেই আম দরবার পুলিশের

অভিযোগ জানাতে সাধারণ মানুষকে থানায় পুলিশের কাছে যেতে হত। এ বার মানুষের অভিযোগ জানতে তাঁদের দোরগোড়ায় হাজির হতে চলেছে থানা। একেবারে উলট-পূরাণ। যা খুব শিগগিরই দেখা যাবে হাওড়া জেলার গ্রামীণ এলাকায়।

Advertisement

নুরুল আবসার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৫ ০১:১৯
Share:

অভিযোগ জানাতে সাধারণ মানুষকে থানায় পুলিশের কাছে যেতে হত। এ বার মানুষের অভিযোগ জানতে তাঁদের দোরগোড়ায় হাজির হতে চলেছে থানা। একেবারে উলট-পূরাণ। যা খুব শিগগিরই দেখা যাবে হাওড়া জেলার গ্রামীণ এলাকায়।

Advertisement

পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বাড়াতে এই নয়া পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের সমস্যার আশু সমাধানে প্রশাসনকে তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আর তার সূত্রে তিনি জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকের ব্যবস্থাও করেছেন। জনসংযোগ বাড়াতে ফুটবল খেলা থেকে শুরু করে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুলিশের তরফে এ সব ছিলই। সম্প্রতি জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল ফুটবল প্রতিযোগিতা। এ বার জেলায় এই নতুন উদ্যোগ সাধারণের সঙ্গে সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে জেলার পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, এখন মানুষকে থানায় অভিযোগ জানাতে আসতে হয়। আগামী দিনে থানা চলে যাবে মানুষের দরবারে।

তবে এই সুযোগ পাবেন কেবলমাত্র সেইসব এলাকার মানুষ যাঁরা প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা-সহ নানা অসুবিধার কারণে যাঁরা থানায় আসতে পারেন না। প্রকল্পটির নাম ‘পুলিশি সহায়তা শিবির।’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে।’’ তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র পুলিশি সহায়তাই নয়, শিবির করার সময় যদি মানুষ পানীয় জল বা রাস্তার মতো সাধারণ সমস্যার কথা জানান তা-ও পৌঁছে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট দফতরে।

Advertisement

কী ভাবে কাজ করবে এই প্রকল্প?

গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুত্রের খবর, প্রথমে কোথায় শিবির হবে তা চিহ্নিত করা হবে। তারপরে সংশ্লিষ্ট থানার পক্ষ থেকে সেই গ্রামে সিভিক পুলিশ, ভিলেজ পুলিশ প্রভৃতির মাধ্যমে গ্রামবাসীর কাছে কোন দিন শিবির বসবে তা প্রচার করা হবে। নির্দিষ্ট দিনে শিবির অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে হাজির থাকবেন অফিসার এবং পুলিশ-কর্মীরা। থানায় যে ধরনের অভিযোগ নেওয়া হয় সেই ধরনের সব অভিযোগই এই শিবিরে পুলিশের কাছে করতে পারবেন গ্রামবাসীরা।

অভিযোগের ভিত্তিতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হল তা-ও পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের জানিয়ে দেওয়া হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ফের ওই গ্রামে পুলিশি সহায়তা শিবির বসবে। একই ভাবে শিবির বসার আগে গ্রামবাসীদের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রচার করা হবে। যদি কোনও গ্রামবাসী আগের শিবিরে অভিযোগ জানানোর পরেও তার ভিত্তিতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হয়ে থাকে তা হলে তিনি ফের দ্বিতীয় শিবিরে পুরনো অভিযোগটিই নতুন করে করতে পারবেন। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, শিবিরে বসে সরাসরি অভিযোগ নিলে অনেক সময়ে তাতে ত্রুটি থেকে যেতে পারে। সেই কারণে দ্বিতীয়বার নতুন করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ থাকছে।

ইতিমধ্যেই কিছু থানা পুলিশি সহায়তা শিবিরের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। চলতি সপ্তাহের শেষে আমতায় পুলিশি সহায়তা শিবির অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন