ধৃত: হাওড়া আদালতের পথে। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে চুরি হলে খুব একটা হইচই হয় না, এমনটাই ধারণা ছিল দুষ্কৃতীদের। তাই একের পর এক স্কুলে হানা দিয়ে কম্পিউটার চুরি করছিল তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
পাঁচলার গঙ্গাধরপুরের দু’টি স্কুলে কম্পিউটার চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে দফায় দফায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই গ্রেফতারের পরেই জেরায় পুলিশ জেনেছে, ধৃতেরা মোট ৯টি স্কুলে কম্পিউটার চুরি করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ঢোলাহাটের সেলিম মোল্লা, বাসন্তীর সইফুদ্দিন মোল্লা ও নুর আলম শেখ, নিউ টাউনের মহম্মদ সৈয়দ, কলকাতা বটতলার বিনোদ সাউ, গড়ফার রাজীবকুমার নাথ এবং জগদ্দলের ফারুক হোসেন। ধৃতদের মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির এবং গঙ্গাধরপুর বালিকা বিদ্যামন্দির— এই দু’টি স্কুলের দরজার তালা ভেঙে দিন পনেরো আগে অন্তত ৩০টি কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ চুরি যায়। তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ফারুক এবং রাজীবকে বাদ দিলে বাকিরা হল পাকা চোর। সকলেই বিভিন্ন চুরির অভিযোগে একাধিকবার জেল খেটেছে। ফারুক এবং রাজীব কম্পিউটার ব্যবসায়ী। তাদের কাছেই চুরি করা কম্পিউটার বিক্রি করা হতো। ধৃতদের কাছ থেকে এই দু’টি স্কুলের চুরি যাওয়া কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
কিন্তু কেন কম্পিউটার চুরির জন্য স্কুলকে বেছে নিত সেলিম-সইফুদ্দিনরা?
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, একাধিকবার গৃহস্থবাড়িতে চুরি করে তারা জেল খাটার সময়েই ঠিক করে, গৃহস্থবাড়িতে চুরি করলে বেশি হইচই হয়। বদলে তারা চুরি করবে স্কুলে। তাতে তেমন শোরগোল হবে না। এর পরে শুধু গঙ্গাধরপুরের ওই দু’টি স্কুলেই নয়, মোট ন’টি স্কুলে তারা কম্পিউটার চুরি করে। এর মধ্যে আছে হাওড়ার পাঁচটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার দু’টি করে মোট চারটি স্কুল।
ধৃতদের জেরা করে যে সব থানা এলাকার স্কুলগুলিতে চুরির কথা জানা গিয়েছে, সেই সব স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। ধৃতদের নিয়ে বুধবার পাঁচলা থানার পুলিশ গঙ্গাধরপুরের দু’টি স্কুলে গিয়ে চুরির ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে।