অকুস্থল: রাস্তায় পড়ে রয়েছে মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।
মোটরবাইক ‘চেকিং’ করতে পথে নেমেছিল পুলিশ। সেখানেই পড়ে গিয়েছিলেন এক মোটরবাইক আরোহী। ঘটনা ছিল এইটুকু। কিন্তু এর জেরে সোমবার বিকেলে তেতে উঠল ধনেখালির নারায়ণপুর এলাকা। আক্রান্ত হল পুলিশ। পথ-অবরোধ, পুলিশকে লক্ষ করে ইট, মোটরবাইক ভাঙচুর— কিছুই বাদ থাকেনি। চার জনকে আটক করে পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ তারকেশ্বর থেকে বর্ধমান যাওয়ার রাস্তায় নারায়ণপুরে একটি পেট্রল পাম্পের সামনে পুলিশ বিনা হেলমেটের মোটরবাইক আরোহীদের ধড়পাকড় করছিল। সেই সময় নারায়ণ হাজরা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাইক নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে ধনেখালি বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। যে জায়গায় ‘চেকিং’ চলছিল, সেখানে ওই ব্যক্তি বাইক থেকে পড়ে যান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের তাড়া খেয়েই নির্মলবাবু পড়ে যান। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, চাকা পিছলে তিনি পড়ে যান। পুলিশকর্মীরাই তাঁকে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু গ্রামে রটে যায় পুলিশের তাড়া খেয়ে নারায়ণবাবু জখম হয়েছেন। তাতেই উত্তেজনা ছড়ায়। কয়েকশো গ্রামবাসী রাস্তায় নেমে পড়েন। শুরু হয় অবরোধ। অবরোধকারীরা অভিযোগ তোলেন, বাইক ধরার নামে আরোহীদের কাছে পুলিশ টাকা তোলে। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে অবরোধকারীদের বচসা হয়। খবর পেয়ে ধনেখালি থানা থেকে আরও বাহিনী আসে। অভিযোগ, গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর চড়াও হয়। ইট ছোড়া হয়। ইটের ঘায়ে সুদীপ রুদ্র এবং স্বপন পাঠক নামে দুই পুলিশকর্মী জখম হন। চার সিভিক ভলান্টিয়ারের বাইক ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের দিকে বাঁশ নিয়েও বিক্ষোভকারীরা তেড়ে যায় বলে অভিযোগ।
শেষ পর্যন্ত লাঠি চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি বাগে আনে। জখম পুলিশকর্মীদের ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। লাঠি চালানোর কথা পুলিশ মানেনি। হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বাইক আরোহীদের থেকে টাকা তোলার অভিযোগও মানেননি পুলিশ আধিকারিকেরা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘যান সুরক্ষার জন্য সব জায়গাতেই চেকিং চলছে। নিয়ম না মেনে গাড়ি চালালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলবে।’’