খোঁজ: নমুনা সংগ্রহ করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ। নিজস্ব চিত্র
পেরিয়ে গিয়েছে ন’দিন। কিন্তু ব্যান্ডেলের কাজিডাঙায় সুলেখা মুখোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় এখনও কোনও দিশা পেল না পুলিশ। ধরাও পড়েনি কেউ।
শুক্রবার সকালে এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এসে ওই বাড়ির জিনিসপত্র খুঁটিয়ে দেখেন। কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেন। কিন্তু কেন সুলেখাদেবী খুন হলেন, কে বা কারা তাঁকে খুন করল, সে ব্যাপারে কোনও উত্তর দিতে পারেননি তদন্তকারীরা। তবে, তাঁরা মনে করছেন খুব পরিচিত কেউ ওই খুনের ঘটনায় যুক্ত। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, তদন্ত চলছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট পেলে খুনের কিনারা করা কিছুটা সহজ হবে।’’
গত ২৬ অক্টোবর সকালে মুখবাঁধা এবং গলার নলিকাটা অবস্থায় বছর পঁয়ষট্টির সুলেখাদেবীর দেহ মেলে তাঁর ঘরে। বিছানা আর আলমারির ফাঁকে মাটিতে দেহটি পড়ে ছিল। কিছু সোনার গয়নাও খোয়া গিয়েছিল। সুলেখাদেবী ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। বাড়িতে একাই পড়াশোনা নিয়ে থাকতেন। দু’জন পরিচারিকা তাঁর কাজ করতেন। পাশেই তাঁর দাদা ও ভাইয়ের বাড়ি। কিন্তু কী কারণে সুলেখাদেবীকে খুন করা হল, ধোঁয়াশা তৈরি হয় তখন থেকেই।
বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। শুধুমাত্র কিছু সোনার গয়নার জন্য ওই অশক্ত, অসুস্থ বৃদ্ধাকে খুন করা হবে, কারণ হিসেবে এটা তদন্তকারীরা মানছেন না। ওই বাড়িতে বেশ কিছু প্রত্নবস্তু রয়েছে। সুলেখাদেবীর বাবা ছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ। বাড়িতে ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র চলত। বহু মানুষের আনাগোনা ছিল। কোনও প্রত্নবস্তুর জন্য বৃদ্ধাকে খুন করা হল কিনা, তা-ও দেখছে পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও প্রত্নবস্তু খোয়া যাওয়ার কথা পুলিশ জানায়নি। তা হলে কেন সুলেখাদেবীকে খুন করা হল, সেই উত্তরই খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
এ দিন ওই বাড়িতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এবং পুলিশ যখন যায়, উপস্থিত ছিলেন সুলেখাদেবীর ভাই শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এখনও আমরা অন্ধকারে। দিদিকে কারা কেন খুন করল বুঝতে পারছি না। আশা করি দ্রুত এর উত্তর মিলবে।’’