অন্য দিনের শুক্রবারও কলেজে এসেছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। ক্লাসেও গিয়েছেন। তবে প্রথাগত পঠন-পাঠনের বাইরে এ দিন তাঁরা অন্য রকম পাঠ নিলেন। অধ্যাপকদের বদলে তাঁদের ক্লাস নিলেন পুলিশ কর্তারা। এমন ছবি দেখা গেল হাওড়ার শ্যামপুর সিদ্ধেশ্বরী মহাবিদ্যালয়ে।
এ রাজ্যে প্রতি তিন থেকে চার মিনিটে পথ দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হচ্ছে বলে পুলিশের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে সরকারের তরফে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ প্রকল্প কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে পথচারী, মোটরবাইকআরোহী ও গাড়ির চালকদের সতর্ক করছে পুলিশ। তেমনি স্কুল, ক্লাব, পাড়া প্রভৃতি জায়গাতেও কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে মানুষকে সচেতন করতে। কিন্তু তার পরেও দুর্ঘটনা কমছে না।
তাই এ বার হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ নেমেছে কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার করতে।
গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘কলেজ পড়ুয়ারা অনেকেই মোটরবাইক বা স্কুটিতে করে যাতায়াত করেন। তাঁরা পরিণত মনের। তাই তাঁদের মধ্যে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ-এর কর্মসূচি বিষয়ি প্রচার করলে অনেক বেশি ফল পাওয়া যাবে। তাঁরা নিজেরা সমস্যাটি বুঝে অন্যদেরও বোঝাতে পারবেন বলে আমরা আশাকরি।’’
এ দিন কলেজে দুপুর ১টার পরে নিয়মিত পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। এর পরেই ছাত্রছাত্রীরা চলে যান বড় হলঘরে। সেখানে একে একে হাজির হন পুলিশ সুপার-সহ জেলা গ্রামীণ পুলিশের পদস্থ কর্তা, দুই বিধায়ক শ্যামপুরের কালীপদ মণ্ডল এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণের পুলক রায়। অডিও-ভিস্যুয়ালের মাধ্যমে পড়ুয়াদের বোঝানো হয়।
শুধু তাই নয়, চলে প্রশ্নোত্তরপর্বও। গ্রামের রাস্তায় শহরের মতো জেব্রা ক্রসিং নেই। সেই অবস্থায় রাস্তা পার হবেন কীভাবে করতে হবে সেই প্রশ্ন করেন চন্দ্রা মণ্ডল নামে এক ছাত্রী।এই রকম নানা প্রশ্ন-উত্তর পর্ব চলে এই ভাবে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে পাঠদান ও প্রশ্নোত্তরপর্ব।
সানু দাস, সুমনা মণ্ডল, মায়াবতী জানা, মাজেদা খাতুনদের কথায়, ‘‘এ দিন প্রথাগত ক্লাস হয়নি। তবে বিকল্পে অনেক কিছু শিখলাম।’’ অধ্যক্ষ সন্তু বসু বলেন, ‘‘পথ নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশকে সবরকম সহায়তা করব।’’