বিক্ষোভ: তারকেশ্বর থানার সামনে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: দীপঙ্কর দে
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে আট দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু হুগলিতে রাজনৈতিক অশান্তি অব্যাহত। বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে শনিবার সকালে আক্রান্ত হলেন তারকেশ্বর
পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডুর দাদা রতন। তিনিও তৃণমূল কর্মী। এক বিজেপি নেতা এবং তাঁর অনুগামীরা রতনবাবুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বিজেপি অবশ্য অভিযোগ মানেনি। পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে বিজেপি সমর্থকেরা তারকেশ্বরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তমবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁদের বাড়ি লাগোয়া একটি পুকুর ‘দখল’ করা হয় বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি বাগে আনতে তারকেশ্বর থানার ওসি বরুণ মিত্র পুলিশ বাহিনী নিয়ে সেখানে যান। তাঁর বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। রতনবাবুও ওই বাড়িতে থাকেন। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ তারকেশ্বর স্টেশন লাগোয়া বাজার থেকে ফেরার পথে আক্রান্ত হন তিনি। স্থানীয় লোকজন তাঁকে কোনওক্রমে উদ্ধার করেন। তাঁকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিকে বিজেপিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ এনেছে। এ দিন বিজেপি মহিলা মোর্চার একটি বৈঠক চলছিল তারকেশ্বরের ভঞ্জিপুর গ্রামে। সেখানে তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্তের দলবল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে এ দিন তারকেশ্বর থানায় বিজেপি-র পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
দু’টি ঘটনা নিয়ে তারকেশ্বরের বিজেপি নেতা জগন্নাথ দাস বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ হামলায় জড়িত নয়। তৃণমূলের স্বপন সামন্ত এবং উত্তম কুণ্ডু যৌথ ভাবে মানুষের উপর এতদিন অত্যাচার চালিয়েছেন। মানুষ এখন তাঁদের প্রতিরোধে নেমেছেন। এটা সাধারণ মানুষের রোষেরই বহিঃপ্রকাশ।’’
তবে, শুধু তারকেশ্বর নয়, হুগলির আরও কয়েকটি জায়গাতেও রাজনৈতিক অশান্তি হয়েছে। জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাটের সুখোরচর এলাকায় শুক্রবার বিজেপি সমর্থকেরা তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় দখল করে নেয় বলে অভিযোগ। শনিবার তৃণমূল সমর্থকেরা সেই কার্যালয় পুনরুদ্ধার করলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চন্দননগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কার্যালয়ও এ দিন বিজেপির হাত থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে এ দিন জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক দিলীপ যাদব পুড়শুড়া, আরামবাগ ও গোঘাটে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে সকালে মোটরবাইক মিছিল হয় আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। সংগঠন এবম পঞ্চায়েতের কাজে স্থানীয় নেতাদের বেশি সময় দেওযার পরামর্শ দেন দিলীপবাবু।