ঈশ্বর গুপ্ত সেতুতে বন্ধ বাস-লরি, দুর্ভোগ কল্যাণীর

হুগলির ব্যবসায়ীরা সেতু পেরিয়ে বড় গাড়ি করে নদিয়ায় মাল আনতে পারছেন না। এত দিন কল্যাণী থেকে দূরপাল্লার যে বাসগুলি ছাড়ত, তারাও জায়গা পাল্টে ওপারে বাঁশবেড়িয়া থেকে ছাড়ছে। আশঙ্কা, বাসের ভার এই নড়বড়ে সেতু নিতে পারবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৭:১০
Share:

সেতু বেহাল আর তার জেরেই যাতায়াতে বিস্তর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কল্যাণীর বাসিন্দাদের।

Advertisement

নদিয়া ও হুগলির মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী প্রায় ৩৪০০ ফুট লম্বা সেতু। বছর দেড়েকের মধ্যে দু’বার সেতুতে ফাটল ধরা পড়েছে। কোনও ক্রমে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করেছে পূর্ত ও সড়ক দফতর। কিন্তু কোনও ভাবেই সেতুকে আগের অবস্থায় ফেরানো যায়নি। ছোট গাড়ি ছাড়া কোনও যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না সেতুতে।

এর জেরে হুগলির ব্যবসায়ীরা সেতু পেরিয়ে বড় গাড়ি করে নদিয়ায় মাল আনতে পারছেন না। এত দিন কল্যাণী থেকে দূরপাল্লার যে বাসগুলি ছাড়ত, তারাও জায়গা পাল্টে ওপারে বাঁশবেড়িয়া থেকে ছাড়ছে। আশঙ্কা, বাসের ভার এই নড়বড়ে সেতু নিতে পারবে না।

Advertisement

এক সময় শুক্রবার বাদে সপ্তাহের প্রত্যেক দিন কল্যাণীর সেন্ট্রাল পার্ক থেকে ভোর ৫টায় ছাড়ত কল্যাণী-বরাকরের বাস। দূরপাল্লার এই বাসে চেপেই মানুষ যেত মগরা, মেমারি, রসুলপুর, বর্ধমান, পানাগড়, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ, আসানসোল-এ। বাসটি সেন্ট্রাল পার্ক থেকে ছাড়ার পর ওই সেতু পেরিয়ে হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে গন্তব্যে যেত। এখন সেই বাস যাত্রা শুরু করে বাঁশবেড়িয়া থেকে। কল্যাণী থেকে বাঁশবেড়িয়ার দূরত্ব অন্তত পাঁচ কিলোমিটার। বাঁশবেড়িয়ায় গিয়ে বাস ধরতে গেলে কল্যাণীর মানুষকে প্রায় আধঘণ্টা সময় খরচ করে প্রথমে বাঁশবেড়িয়া যেতে হয়।

যাত্রীদের থেকে জানা গেল, আগে থেকে টোটো বলে রাখতে হয়। কারণ ভোরবেলা বাঁশবেড়িয়া পৌঁছনোর কোনও যানবাহন মেলে না। টোটো চালকেরা মওকা বুঝে একশো-দেড়শো টাকা চেয়ে বসেন।

একই ভাবে সকাল ১০টা ২০ নাগাদ কল্যাণী মেন স্টেশন থেকে এক সময় ছাড়ত কল্যাণী-বেনাচিতি বাস। বেহাল সেতুর কারণে ওই বাসটিও এখন আর কল্যাণী থেকে ছাড়ে না। সেটিও ছাড়ছে বাঁশবেড়িয়া থেকেই।

শহরের বি-ব্লকের এক মহিলা বাসিন্দা জানান, তাঁর বাপের বাড়ি রানিগঞ্জে। অত ভোরে সেতু পেরিয়ে বাঁশবেড়িয়ায় গিয়ে বাস ধরতে খুবই মুশকিলে পড়ছেন। কল্যাণীর মানুষকে এখন দুর্গাপুর বা আসানসোলে যেতে হলে নৈহাটি থেকে ট্রেন ধরতে হয়। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া সরিফুল ইসলামের কথায়, ‘‘আমার বাড়ি আসানসোলে। আগে দিব্যি বাসে চেপে দুপুরের আগেই বাড়ি পৌঁছে যেতাম। এখন তা হয় না।’’ সরিফুল জানাচ্ছেন, সকালের দিকে একটা ট্রেন রয়েছে। বিহারের মোজাফ্ফরপুর যায় ট্রেনটি। ভিড়ের চোটে তাতে উঠতেই পারেন না অনেকে।

সেতুটির দেখভালে যুক্ত হুগলি হাইওয়ে ডিভিশন-২ (পূর্ত ও সড়ক)। তার এক কর্তা বলেন, ‘‘গঙ্গার পাড়ের বালি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে পাচারকারীরা তুলে নেওয়ার ফলে স্তম্ভগুলি দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সারাতে সময় লাগবে। যান চালাচল শুরুর আশু সম্ভাবনা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন