নিশা তাঁতি। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিকে মেয়ে স্কুলের সেরা। তাতেও মন ভাল নেই রাজেন্দ্রপ্রসাদ এবং সরস্বতী তাঁতির। চিন্তা তাঁদের মেয়ের পরবর্তী পড়াশোনা নিয়ে।
চটকলের কর্মী রাজেন্দ্রবাবুর রোজগার সামান্য। শ্রীরামপুরের দে স্ট্রিটে ভাড়া বাড়িতে বাস। সংসার চালিয়ে মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ চালানো কার্যত অসম্ভব বলে তিনি জানান। মেয়ে নিশা শ্রীরামপুর ভারতী বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ৬৩৩ নম্বর পেয়েছে। অঙ্কে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৮। আরও তিনটি বিষয়ে নম্বর ন’য়ের ঘরে।
নিশা জানায়, পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় শহরেরই আর্ত সেবা সমিতি এবং সুশোভন অবৈতনিক পাঠশালায় নিখরচায় পড়েছে সে। পাশাপাশি, স্কুলের শিক্ষাকারাও সাহায্য করেছেন। নিশা ঠিক করেছে, এ বার বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবে। স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার।
কিন্তু পড়ার খরচের প্রশ্নে তাঁর বাবা-মায়ের মুখ শুকিয়ে আসে। দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে নিশা বড়। বাকি দুই মেয়ের এক জন নবম শ্রেণিতে এবং অপর জন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
সরস্বতীদেবী বলেন, ‘‘আমরা তো চাই মেয়ে অনেক পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াক। কিন্তু মাঝে মধ্যেই ওর বাবার মিল বন্ধ থাকে। তখন সংসার চালানোই দায়। অনেকেই মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। না হলে হয়তো এত দূরও ওকে পড়াতে পারতাম না।’’
সুশোভন অবৈতনিক পাঠশালার শিক্ষক শুভ্রনাথ দাসের কথায়, ‘‘একটু সুযোগ পেলেই নিশা দারিদ্রকে হারিয়ে সফল হবে।’’