থিমের দাপট বাগনানের পুজোয়

হাওড়া দুর্গাপুজোর মানচিত্রে বাগনান উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে অনেক আগে থেকে। পাঁচ-ছ লাখি বাজেটের দুর্গাপুজোর ছড়াছড়ি। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন পুজো দেখতে।

Advertisement

নুরুল আবসার

বাগনান শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০২
Share:

পুজো মণ্ডপ না ‘বাহুবলী ২’-এর সেট? বাগনানের হারোপ জাতীয় পাঠাগারের সামনে এলে এমন ভ্রমেই পড়বেন দর্শনার্থীরা।

Advertisement

হাওড়া দুর্গাপুজোর মানচিত্রে বাগনান উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে অনেক আগে থেকে। পাঁচ-ছ লাখি বাজেটের দুর্গাপুজোর ছড়াছড়ি। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন পুজো দেখতে।

নুন্টিয়া তরুণ দল-এর এবারের থিম বিশ্ব উষ্ণায়ন। মণ্ডপ চত্বরে গড়া হয়েছে গ্রাম্য পরিবেশ। খোঁড়া হয়েছে পুকুর। মডেল এবং ছবি দিয়ে বোঝানো হয়েছে উষ্ণায়নের বিপদ।

Advertisement

বাঁটুল ক্লাবের থিম, ‘গাছ লাগাও, প্রাণ বাঁচাও।’ তৈরি হয়েছে বিশাল বটগাছ। তিন মাস ধরে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। উদ্যোক্তারা জানান, সম্প্রতি বটগাছ বাঁচানো নিয়ে কিছু মানুষের আন্দোলনের কথা তাঁরা সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছেন। তা থেকেই এমন থিমের ভাবনা।

বাঁটুল প্রগতি সঙ্ঘের থিম ‘সত্যম শিবম সুন্দরম।’ পাহাড়ের মাথায় শিবমূর্তি।

আচমকা দেখলে মনে হবে কোনও পোড়োবাড়ি। আসলে এটি পুজো মণ্ডপ। খালোড় দক্ষিণ পল্লির এই মণ্ডপ তৈরি হয়েছে একটি দোতলা জীর্ণ বাড়ির আদলে। উদ্যোক্তারা জানান, তাঁদের ঝোঁক প্রাচীনত্বের দিকে। খালোড় যুব সঙ্ঘের মণ্ডপ দূর থেকে দেখলে মনে হবে ক্যানভাসে আঁকা কোনও ছবি। এই মণ্ডপের কাছে গোপীমোহন শিক্ষায়তন। ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে লক্ষ্য রেখে এই মণ্ডপ করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে মডেল।

বাগনান জাতীয় সঙ্ঘের মণ্ডপ মন্দিরের আদলে তৈরি। যেমন এর বিশালত্ব, তেমনই আলোকসজ্জা।

বাগনান বাসস্ট্যান্ডে মুক্তদল-এর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে শিবলিঙ্গের আদলে। পুজোর কয়েকটা দিন স্ট্যান্ডে বাস, অটো রিকশা, ট্রেকার কিছুই ঢোকে না। দর্শনার্থীদের ভিড়ে মেলার আকার নেয় বাসস্ট্যান্ড।

বেড়াবেড়িয়া মিলন সঙ্ঘের থিম ‘পরিবেশ সচেতনতা।’ মডেল ও ছবি দিয়ে সেইসব বোঝানো হয়েছে।

বরুন্দা বিবেকানন্দ পল্লিকল্যাণ সমিতির থিম ‘উত্তরাখন্ডের বন্যা।’ তার মধ্যে পাহাড়ের চূড়ায় বসে শিব। কিছুটা এগিয়ে গেলেই দেউলটি অলস্টার ক্লাবের পুজো। মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মন্ডপ।

বাগনান টাউন ক্লাবের কোর গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে যে ৯ জন রয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই প্রবীণ। টাউন ক্লাবের পুজো একসময়ে মণ্ডপ ও আলোকসজ্জায় বাগনানে নতুনত্ব আমদানির দিশারি ছিল। কিন্তু এখন আর সেই সোনালী দিন নেই। এ বছর পুজো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু রুখে দাঁড়ান কোর গ্রুপের অন্যতম সদস্য ছিয়াত্তর বছরের ষষ্ঠী সামন্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বললাম, পুজো বন্ধ হবে না। দরকার হলে আমি চাঁদা তুলতে বেরোব।’’ ষষ্ঠীবাবুর এই কথায় বাকিরা সোজা হয়ে দাঁড়ালেন। পুজোয় ছেদ পড়ল না। খুব বেশি চাঁদা না ওঠায় বাজেট কম। থিম ত্রিনয়নী মা। ছোট মণ্ডপ হলেও এর শিল্পকলায় ফুটে বেরোচ্ছে হীরকখণ্ডের দ্যুতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন