ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি বাসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ছাত্র। ঘটনাস্থল ছিল আরামবাগ। সেই ঘটনার পর পুলিশি তৎপরতা, নজরদারি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। এ বার বাসের ছাদে যাত্রী ওঠা বন্ধ করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন আরামবাগেরই এসডিপিও।
বুধবার রাতে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুলিশ বাহিনী নিয়ে অভিযান করেন আরামবাগের এসডিপিও হরেকৃষ্ণ পাই। দেখা যায়, অধিকাংশ বাসের ছাদেই বসে রয়েছে অনেক যাত্রী। তাদের প্রত্যেককে বাসের ছাদ থেকে নামার নির্দেশ দেন হরেকৃষ্ণবাবু। অভিযোগ, তখনই যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
যাত্রীদের অভিযোগ, বাসে জায়গা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁরা বাসের ছাদে চেপে যাতায়াত করেন। ফলে সমস্যাটা বাসের কম সংখ্যার। এমনকী তাঁরা বিকল্প বাসের দাবিও তোলেন। প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে ভোগান্তির পর অবশ্য বিকল্প বাসের ব্যবস্থা করে দেন এসডিপিওই।
গত ৪ মে আরামবাগ শহরের গৌরহাটি মোড় সংলগ্ন লিঙ্করোডে বাসের ছাদ থেকে নামতে গিয়ে প্রদীপ চক্রবর্তী নামে স্থানীয় সালেপুর গ্রামের এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র গুরুতর জখম হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানেই সে মারা যায়।
ঘটনার পরই বাসের সংখ্যা কম, পুলিশি নজরদারির গাফিলতি নিয়ে সোচ্চার হন এলাকার বাসিন্দারা। সেই সময় পুলিশ জানিয়েছিল, বাসের ছাদে যাত্রী তুললে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তারপর আরামবাগ মহকুমা তো বটেই, শহরের মধ্যেও বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণের ছবিেত কোনও বদল আসেনি।
বুধবার স্বয়ং এসডিপিওর অভিযানের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবশ্য বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণ কমেছে অনেকটাই। তবে আরামবাগ-বর্ধমান রুটে রাতের বাসের নিত্যযাত্রীরা অবশ্য এই অভিযানের জেরে হয়রানির আশঙ্কা করছেন। তাঁদের অভিযোগ, বুধবার যে বাসের ছাদ থেকে যাত্রী নামানো হয়েছে, সেটা ওই রুটের শেষ বাস। এমনিতে বাসটি ছোট। তার উপর আগের একটি বাস মেরামতে যাওয়ায় ওই বাসের ভিতরে জায়গা না পেয়েই ছাদে ঠাঁই নিতে হয়েছিল। আরামবাগ থেকে বর্ধমান রুটের রাতের শেষ বাসটি আচমকাই গত জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ থেকে বন্ধ। ফলে সেই বাস চালুর দাবিও জানিয়েছেন যাত্রীরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন বাসের নিত্যযাত্রীরা।
তবে এর ফলে অভিযানে কোনও সমস্যা হবে না বলেই দাবি হরেকৃষ্ণবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘বাসের ছাদে কোনওভাবে যাত্রী বহন করা যাবে না। এই অভিযান চলবে।”