মান্নানকে ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন মৃতের আত্মীয়। —নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত যুবকের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল মান্নান। বিক্ষোভের মুখে এক সময় মেজাজ হারাতেও দেখা যায় মান্নানকে।
গত দু’মাস ধরে শ্রীরামপুর পুর-এলাকায় ডেঙ্গি ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি ‘মহামারি’র আকার নিয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবন ঘোষণা করে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শনিবার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুমিরজলা রোডে অসিত দাস নামে এক যুবকের মৃত্যু হয় কলকাতার খিদিরপুর এলাকার একটি নার্সিংহোমে। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ মৃতের বাড়িতে যান চাঁপদানির বিধায়ক ও বিরোধী দলনেতা মান্নান। সেখানে মৃতের আত্মীয়দের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
এলাকাবাসীর দাবি, ওই পাড়ায় পঞ্চাশ জনেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। দিন কয়েক আগে ওই পাড়ায় গিয়েছিলেন মান্নান। তখন অসিত খিদিরপুরের ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃতের বাড়ির লোকজনের দাবি, ওই দিন মান্নানকে তাঁরা জানান, নার্সিংহোমে চিকিৎসায় প্রচুর খরচ হচ্ছে। তিনি যেন খরচ কিছুটা কমানোর বন্দোবস্ত করেন। এ দিন মৃত অসিতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মাকে সমবেদনা জানান মান্নান। সেই সময়েই ঘরে ঢোকেন মৃতের জ্যাঠতুতো দাদা আনন্দময় দাস। মান্নানকে তিনি বলেন, ‘‘যখন প্রয়োজন ছিল, তখন তিনি কিছু করেননি। এখন কেন এসেছেন।’’ মান্নান তাঁকে জানান, তিনি খরচ কমানোর জন্য নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে সাড়া মেলেনি। মান্নানের বক্তব্য মানতে রাজি হননি আনন্দবাবু। এর মধ্যেই মান্নান রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। আনন্দবাবু রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাল্টা আনন্দবাবু বলেন, ‘‘মান্নান নিজেই রাজনীতি করছেন।’’
ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের পাশে আমরা সব সময় আছি। কিন্তু বিরোধী দলনেতা নিছক রাজনীতি করতে এসেছিলেন। বিধায়ক হিসেবে ওঁর ভূমিকা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন। ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রশাসন বা পুরসভা সব রকম ব্যবস্থাই নিচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সুপ্রীতি মুখোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, অসিতবাবু ডেঙ্গিতে মারা যাননি। এ দিন অবশ্য পুর-কর্তারা মেনে নিয়েছেন, ডেঙ্গিতেই ওই যুবক মারা গিয়েছেন।