জঞ্জাল সাফাইয়েও এ বার জড়াল রাজনীতি। খেলার মাঠের ধারে কেন জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে সেই জঞ্জালই কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার সামনে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলল তৃণমূলের লোকজন।
শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে জয়নগরে। গোটা ঘটনায় হতবাক শহরবাসীও। জঞ্জাল পরিস্কার করার কথা বলছেন সকলেই। কিন্তু প্রতিবাদের এই ধরনে সায় নেই অনেকের। কারণ, পুরসভার সামনে জঞ্জাল তুলে এনে ফেলায় আখেরে দূষণই ছড়াল।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়নগর পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ড থেকে সংগ্রহ করা জঞ্জাল আগে ফেলা হতো সাহাজাদাপুর এলাকায়। মাস কয়েক ওই জঞ্জাল ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি খেলার মাঠে পাশে স্তূপাকৃত করে রাখা হচ্ছিল। ওই আবর্জনা কম্প্যাক্টর মেশিনে শুকনো করে ফেলে আসা হয় ময়লাপোতা এলাকায়। ফি সপ্তাহের শনিবার ওই কাজ চলে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিভিন্ন ওয়ার্ডের জঞ্জাল ট্রলিতে করে ওই মাঠের পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ সে সময়ে স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন ওই এলাকায় ময়লা ফেলতে বাধা দেয়। ট্রলি ফিরিয়ে এনে পুরসভার সামনে ফেলে দেয় তারা। থানার মোড়ে বিক্ষোভ চলে ঘণ্টা দু’য়েক ধরে।
পুরসভার সামনে জঞ্জাল ফেলা নিয়ে কংগ্রেসের পুরপ্রধানের সঙ্গে তৃণমূলের দ্বন্দ্বও বেধে যায়। পুরপ্রধান সুজিত সরখেলের অভিযোগ, ‘‘এটা তৃণমূলের একেবারে নোংরা রাজনীতি। পুরসভার সামনে এ ভাবে জঞ্জাল ফেলার আগে আমাদের সঙ্গে ওরা আলোচনায় বসতে পারত।’’ পুরপ্রধানের আরও বক্তব্য, ‘‘মাঠের পাশে জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওরা করছে, তা-ও ঠিক নয়। ওখানে কম্প্যাক্টর মেশিনে ময়লা নির্জাস করে ময়লাপোতায় ফেলে দিয়ে আসা হয়।’’ পুরপ্রধানের দাবি, এ দিন তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। সমস্ত বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে জানিয়েছেন। পরে পুরসভার পক্ষ থেকেই ওই জঞ্জাল সরিয়ে ফেলা হয়। তবে ফের মাঠের ধারে আবর্জনা ফেলা হবে কিনা, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি পুর কর্তৃপক্ষ। বারুইপুরের মহকুমাশাসক রাজর্ষি মৈত্র বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কেউ লিখিত ভাবে কিছু জানায়নি। তবে সমস্যার কথা শুনেছি। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করব।’’
তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘জঞ্জাল ফেলার ঘটনা শুনে গিয়েছিলাম। ওই মাঠে অনেকেই প্রাতর্ভ্রমণ করেন। খেলাধূলা হয়। দোকানিরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।’’ পুরসভা সব জেনেও কেন ময়লা ফেলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে তৃণমূল নেতা এ-ও জানান, দলের কর্মীরা পুরসভার সামনে যে ভাবে ময়লা ফেলে এসেছে, তা তিনি সমর্থন করেন না।