এ ভাবেই কাটা হয়েছে গাছের ডাল। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল কুটির মাঠে। অভিযোগ, সে জন্য বেশ কিছু গাছে ছেঁটে দিয়েছে পুলিশ। এলাকার তিন যুবক প্রতিবাদ করতেই তাঁদের আটক করা হয়। আর তাতেই অসন্তোষ ছড়িয়েছে উৎসবের শহরে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু কুটির মাঠ নয়, গঙ্গা পাড়ের বেশ কয়েকটি গাছও ছাঁটা হয়েছে।
এ দিন ছিল জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমী ও নবমী তিথি। ভিড় সামলাতে ব্যস্ত প্রশাসন। তারই মধ্যে দুপুর ২টো নাগাদ হেলিকপ্টারে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পালপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপে পুজো দেবেন এমনই স্থির হয়েছিল আগেই। তাই কাছাকাছি কুটির মাঠেই হেলিপ্যাড করেছিল প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুটির মাঠে বেশ বড় বড় গাছ রয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল কপ্টার নামার পথে সমস্যা হতে পারে লম্বা গাছগুলি। সে জন্যই এ দিন সকালে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা মাঠে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিল কর্পোরেশনের গাছ ছাঁটার লোকজন। কিন্তু কাজ শুরু হতেই প্রতিবাদ করেন এলাকার তিন যুবক। গাছ কেন ছাঁটা হবে সেই প্রশ্নে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন এলাকার আরও কিছু বাসিন্দা। প্রমাদ গোনেন পুলিশ আধিকারিকরা। তড়িঘড়ি আটক করা হয় তিন জনকে। তবে থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গোটা ঘটনায়। এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, ‘‘চন্দননগর শহরকে গ্রিন সিটি হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বেশি করে গাছ লাগাতে বলা হয়েছে। আর এখন সরকারি লোকজনই গাছ ছেঁটে দিচ্ছে! এটা অন্যায়। এর প্রতিবাদ করায় ধরে নিয়ে গেল— সেটা তো আরও অন্যায়।’’
চন্দননগরের বাসিন্দা পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘প্রতিবাদীদের আটক করা মোটেও ঠিক হয়নি। ওই তিন তো যুবক ঠিক কাজই করেছিলেন।’’ পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন কুটির মাঠে হেলপ্যাড করা নিয়েও। তাঁর দাবি, ‘‘হেলিপ্যাডের জন্য প্রশাসন কেন কুঠির মাঠকে বেছে নিল, সেটাই বুঝতে পারছি না। পাশে তো মেরির মাঠও ছিল। সেখানে গাছ নেই। সেখানেই হেলিকপ্টার নামতে পারত।’’
চন্দননগরের কমিশনার স্বপন কুণ্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক দফতর, চন্দননগর কমিশনারেটের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে স্থির হয়, কুটির মাঠের কিছু গাছ ছাঁটা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত।’’