দেবব্রত মান্না। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক হল, ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরি হয়েছে। টালির চালের বাড়িতে অভাবের ছাপ স্পষ্ট। তবু এমন অন্ধকারের মধ্যেই আলো জ্বালিয়েছে মাধ্যমিকের ফল। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে হরিপালের গোপীনাথপুরের মোড়া সেনপাড়ার দেবব্রত মান্না মাধ্যমিকে ৬৫২
নম্বর পেয়েছে।
গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সে পড়ছে পঞ্চম শ্রেণি থেকে। বরবারই স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম বা দ্বিতীয় হয়। মাধ্যমিকেও ভাল ফল হওয়ায় খুশি স্কুলের শিক্ষক থেকে বাড়ির সকলেই। দেবব্রত জানিয়েছে, সে বিজ্ঞান নিয়ে প়ড়ে চিকিৎসক হতে চায়।
আর সেইখানেই আশঙ্কা মান্না পরিবারের। দেবব্রতর বাবা জয়দেব মান্না পেশায় তাঁতি আর মা শিখাদেবী গৃহবধূ। জয়দেববাবুর কথায়, ‘‘তাঁত চালিয়ে আর কত টাকাই বা রোজগার হয়। সংসারই চালাতে পারি না। ছেলেটা বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। টাকার অভাবে কী ভাবে যে কী করব, জানি না।’’ শিখাদেবী বলেন, ‘‘মহাজনদের কাজের উপর নির্ভর করতে হয়। সেটাও তো সারা বছর থাকে না। ছেলের পড়াশোনা কীভাবে হবে, জানি না।’’
তবে এত সহজে হাল ছাড়তে নারাজ দেবব্রত। তার কথায়, ‘‘জানি অভাব রয়েছে। এতদিন তো সেই অভাবকে সঙ্গী করেই লড়াই করলাম। আবার লড়াই করব। মহাভারতের ভীষ্ম আমার প্রিয় চরিত্র।’’ মহাভারতে ভীষ্মের আর এক তো দেবব্রতই!