থমকে: ট্রেন অবরোধ নিত্যযাত্রীদের। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রেন সময়ে আসে না, এ নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ নতুন নয়। প্রতিদিনের সেই সমস্যার প্রতিবাদ জানাতে তাই রেল অবরোধ করেই বিক্ষোভ দেখালেন যাত্রীরা।
বুধবার সকালে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার খন্যান স্টেশনে অবরোধের জেরে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়। বিভিন্ন স্টেশনে লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। সওয়া দু’ঘণ্টা অবরোধ চলার পর পুলিশি হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৭৮২০ ডাউন বর্ধমান-হাওড়া লোকাল খন্যান স্টেশনে ঢোকার কথা সকাল ৭টা ৮ মিনিটে। বহু অফিসযাত্রী ওই ট্রেন ধরেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনও দিনই ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশনে ঢোকে না। ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে মালগাড়ি বা অন্য ট্রেন আগে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে, নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছয়। এই নিয়ে নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ ছিলই।
বুধবার সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ স্টেশনের মাইকে ঘোষণা করা হয়, ট্রেনটি তখন মেমারিতে। ফলে, ট্রেনটির খন্যানে পৌঁছতে আরও প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগার কথা। ওই ঘোষণা শুনেই নিত্যযাত্রীরা খেপে যান। শুরু হয় অবরোধ। খবর পেয়ে জিআরপি, আরপিএফ এবং পান্ডুয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। রেলের লোকজনও আসেন। তাঁরা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি। অবরোধকারীদের দাবি, এর আগেও রেলের তরফে এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তবে কাজের কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্টেশন ম্যানেজারের অফিস থেকে ফোনে হাওড়ার পদস্থ রেলকর্তাদের সঙ্গে অবরোধকারীদের কথা বলানো হয়। তাঁদের আশ্বাসে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে আরও বেশ কিছুক্ষণ।
যে ট্রেনটিকে নিয়ে সমস্যা, সেটির পিছনেই থাকে ডাউন গ্যালপিং বর্ধমান-হাওড়া সুপার। ট্রেনটি বর্ধমান ছাড়ার পরে শুধু ব্যান্ডেলে দাঁড়ায়। তার পরে হাওড়া। তাড়াতাড়ি হাওড়া পৌঁছতে খন্যানের অনেক যাত্রী আগের লোকাল ট্রেন ধরে ব্যান্ডেলে চলে আসেন। তার পরে সুপার ধরে হাওড়ায় যান। তাঁদের অভিযোগ, লোকাল ট্রেনটির পাশাপাশি সুপারটিও নিত্যদিন দেরি করে ব্যান্ডেল পৌঁছয়।
বাসুদেব মোহন্ত নামে এক নিত্যযাত্রী সল্টলেকে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘শুধুমাত্র ট্রেন দেরি করায় প্রতিদিন অফিস পৌঁছতে দেরি হয়। দিনের পর দিন এমনটা চলতে পারে না কি?’’ যাত্রীদের আরও অভিযোগ, খন্যান স্টেশনে একটি মাত্র টিকিট কাউন্টার। ব্যস্ত সময়ে সেখানে ভিড় লেগেই থাকে। অথচ বছর খানেক ধরে আরও একটি টিকিট কাউন্টার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। সেটি অবিলম্বে চালুর দাবি করেছেন যাত্রীরা। এ বিষয়ে রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি।