অমিল বালি, ফেলা হচ্ছে মাটির বস্তা

জোরকদমে বাঁধ সারাই, দেখলেন মন্ত্রী

সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তোড়ে হাওড়ায় দামোদরের ডান দিকের বাঁধের ২১টি জায়গা, শর্টকার্ট চ্যানেলের ৩টি জায়গা এবং রামপুর খালের ১৭টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫২
Share:

নজরদারি: রামপুর খালে চলছে বাঁধ মেরামতি।

অগস্টের প্রথম সপ্তাহে অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে গিয়েছিল হাওড়ার আমতা ২ এবং উদয়নারায়ণপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তোড়ে ভেঙে যায় দামোদর খাল, রামপুর খাল এবং দামোদর ও রূপনারায়ণ সংযোগরক্ষাকারী শর্টকার্ট চ্যানেলের বিভিন্ন জায়গা। জল নামার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সেই সব বাঁধ মেরামতির কাজ খতিয়ে দেখলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তোড়ে হাওড়ায় দামোদরের ডান দিকের বাঁধের ২১টি জায়গা, শর্টকার্ট চ্যানেলের ৩টি জায়গা এবং রামপুর খালের ১৭টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছিল। প্লাবিত হয়েছিল এলাকা। বাঁধের উপর দিয়ে যেসব গ্রামবাসী যাতায়াত করতেন তাঁরাও বিপাকে পড়েন। সেচ দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক কর্তা জানান, দিন কুড়ি আগে থেকে ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। বাঁধ মেরামতির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪০ কোটি টাকা।

কেমন হচ্ছে মেরামতির কাজ?

Advertisement

আমতা ২ ব্লকের জয়পুরের সাবগাছতলা এলাকার শর্টকার্ট চ্যানেলের বাঁ দিকের বাঁধের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা ভেঙে গিয়েছিল। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া অংশে বালির বস্তা ফেলে দেওয়াল তৈরি হচ্ছে। তার উপরে মাটি ফেলা হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকেদারেরা জানান, বাঁধের ভিতরের অংশ বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো হবে। ওই ব্লকেরই সাতপোতায় রামপুর খালের দু’দিকের বাঁধে প্রায় ৭০০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। ওই এলাকায় শালবল্লির খাঁচা তৈরি করা হচ্ছে। তার পর মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে দেওয়াল তৈরি হচ্ছে। সেচ দফতরের হাওড়া ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায় জানান, এরপর দেওয়ালের উপরে মাটি ফেলা হবে।

কাজ দেখছেন সেচমন্ত্রী। ছবি: সুব্রত জানা

দামোদরের ডান দিকের বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো যাবে না বলে সেচ দফতর নির্দেশ দিলেও একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অনেক জায়গায় সেগুলি উঁচু করে ফেলা হয়েছে। সেই কারণেও কিছু বাঁধ ভেঙেছে। সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি, এই বছরের মতো নদী বাঁধে ভাঙন আগে হয়নি বললেই চলে। সেপ্টেম্বরের শেষে ডিভিসি আবার জল ছাড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। সেই কথা ভেবেই তড়িঘড়ি মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন বালি সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় বোল্ডারও সম্ভব হচ্ছে না। তাই নদীর চর থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। সেই মাটি বস্তায় ভরে বাঁধ মেরামতি করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সেচমন্ত্রী জয়পুরের সাবগাছতলা এবং সাতপোতা এলাকায় যান। সেখানে বাঁধ মেরামতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের থেকে কাজের অগ্রগতি জানতে চান তিনি। রাজীববাবু বলেন, ‘‘মেরামতির কাজ ঠিকই হচ্ছে। তবে কাজ আরও দ্রুত শেষ করতে হবে, কারণ বন‌্যার আশঙ্কা এখনও কাটেনি।’’ তিনি জানান, বকপোতা থেকে থলিয়া পর্যন্ত দামোদরের ডান দিকের বাঁধকে শক্তিশালী করা হবে। সেই কাজ আগামী বছরে শেষ হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন