ছিনতাইবাজদের দাপটে অতিষ্ঠ শ্যামপুরের বাসিন্দারা।
দিনে দুপুরে কেউ ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছেন পিছন থেকে দূষ্কৃতীরা বাইকে করে এসে ছিনতাই করে নিচ্ছে টাকা। আবার পথচলতি কোনও মহিলার গলা থেকে সোনার চেন ছিঁড়ে নিয়ে চম্পট দিচ্ছে দুষ্কৃতী। রাতে বাড়ির ভিতর থেকে মোটর বাইক চুরির ঘটনাও ঘটছে।
হাওড়ার শ্যামপুরে টানা কয়েক মাস ধরে এ ধরনের ঘটনায় এঐলাকার মানুষজন যেমন অতিষ্ঠ, তেমন আতঙ্কিতও। দুষ্কৃতীদের দাপটে সাধারণ পথচারী থেকে ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা-পয়সা নিয়ে রাস্তায় যাতায়াত করতেই ভয় পাচ্ছেন। পর পর বেশ কিছু ঘটনা ঘটলেও পুলিশ-প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। পুলিশও চুরি-ছিনতাইয়ের কথা একেবারে অস্বীকার করছে না। তবে তাদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে থানায় কেউ অভিযোগ জানাচ্ছেন না। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা তদন্ত করছে। তাদের দাবি, এলাকায় চুরি-ছিনতাই কমাতে পুলিশ তৎপর। তবে নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি মৌল এলাকার বছর চল্লিশের এক মহিলা শ্যামপুর স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। শ্যামপুর থেকে অটো ধরে তিনি নামেন মৌল স্টপেজে। তাঁর অভিযোগ, অটো থেকে নেমে হাঁটার সময় পিছন থেকে মোটর বাইকে চেপে জনা তিনেক ছেলে তাঁর গলার সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। চিৎকার করলেও লাভ হয়নি, কেননা ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা নাগালের বাইরে চলে যায়। থানায় অভিযোগ না করার প্রশ্নে মহিলার পরিবারের বক্তব্য, তাঁরা আতঙ্কিত, পাছে ফের হামলা হয়। তা ছাড়া, থানা-পুলিশের ঝামেলার ভয়ে তাঁরা থানায় অভিযোগ জানননি। ওই দিনই শশাটি এলাকায় আর একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। শশাটি বাজারের এক মাছ বিক্রেতা দুপুরে রিকশায় উদ্ধবপুরে বাড়ি ফিরছিলেন। রামনগরের কাছে এক বাইক আরোহী তাঁর সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গত ২৭ জুলাই শ্যামপুর-বাগনান রোডে সাইকেলে যাচ্ছিলেন এক তরুণী। খিদিরপুর ওয়েব্রিজের কাছে হঠাৎই জনা তিনেক বাইক আরোহী পিছন থেকে এসে তাঁর গলার হার ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তরুণীর কথায়, ‘‘হারটি ইমিটেশনের হওয়ায় সেই অর্থে আমার কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু যা ঘটল তাতে আমি রীতিমত আতঙ্কিত।’’ দিন পনেরো আগে শ্যামপুরের পদ্মপুকুর এলাকায় এক ব্যক্তির ৩০ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। তিনিও শ্যামপুর স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলেন।
বার বার এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারি নেই বললেই চলে। তার ফলেই দুষ্কৃতীদের এমন বাড়বাড়ন্ত। শ্যামপুরের বাসিন্দা তপন মণ্ডলের কথায়, ‘‘শ্যামপুর এলাকায় চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা যে ভাবে বাড়ছে তাতে সকলেই চিন্তিত। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সকলে। এলাকায় আতঙ্ক কমাতে অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ।’’