বাঁশবেড়িয়ায় তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর

দলের বিক্ষুব্ধরাই হামলায় জড়িত, অভিযোগ আক্রান্তের

বিরোধী নয়, খোদ শাসকদলের সমর্থকের বাড়িতেই হামলার অভিযোগ উঠল এ বার বাঁশবেড়িয়ায়। অভিযোগের তির যাদের দিকে তারা দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে আক্রান্তের অভিযোগ। টিকিট না পাওয়ার কারণে দলের বিক্ষুব্ধরাই এই হামলা চালিয়ছে বলে তাঁর অভিযোগ। রবিবার রাতে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দালানপাড়ায় তৃণমূল কর্মী হরিসাধন নন্দনের বাড়িতে ওই হামলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১২
Share:

পড়ে আছে ভাঙা দরজা। ছবি: তাপস ঘোষ।

বিরোধী নয়, খোদ শাসকদলের সমর্থকের বাড়িতেই হামলার অভিযোগ উঠল এ বার বাঁশবেড়িয়ায়। অভিযোগের তির যাদের দিকে তারা দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে আক্রান্তের অভিযোগ। টিকিট না পাওয়ার কারণে দলের বিক্ষুব্ধরাই এই হামলা চালিয়ছে বলে তাঁর অভিযোগ। রবিবার রাতে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দালানপাড়ায় তৃণমূল কর্মী হরিসাধন নন্দনের বাড়িতে ওই হামলা হয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলাকারীরা হরিসাধনবাবুর বাড়ির সদর দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে যথেচ্ছ গালিগালাজ করে। হুমকি দেওয়া হয় যে, ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বাঁশবেড়িয়া পুরসভার বিদায়ী উপপ্রধানের হয়ে কাজ করা চলবে না। হামলাকারীরা প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে তাণ্ডব চালিয়ে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। রাতেই হরিসাধনবাবু দলীয় নেতৃত্বকে সমস্ত ঘটনা জানান। সপ্তগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা সভাপতি তপন দাশুগুপ্তকেও সব জানান তিনি। হরিসাধনবাবুর দাবি, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এই হামলা করা হয়নি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের দলেরই যে সকল সদস্য পুরভোটে টিকিট পায়নি তারাই নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছে। তাদেরই লোকজন এই হামলা চালিয়েছে।’’ এ ব্যাপারে মগরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে পুলিশ। এলাকায় আতঙ্কের পাশাপাশি তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হরিসাধনবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এই ধরনের হামলা আমার বাড়িতে কোনওদিন ঘটেনি। এমনকী বাম আমলেও নয়। কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারছি না। স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্ব সকলকে জানিয়েছি।’’

Advertisement

তপনবাবু বলেন, ‘‘টিকিট না পেয়ে দলের যে সব বিক্ষুব্ধ নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে দলবিরোধী কাজ করছেন তাঁদের আর দলে ফেরানো হবে না। সিপিএমও ওদের মদত দিচ্ছে। যারা এই হামলায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বিদায়ী উপপ্রধান অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘পুরভোটে আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকেই দলে যারা এ বার টিকিট পায়নি সেই বিক্ষুব্ধদের আক্রোশ এসে পড়েছে আমার উপর। পুলিশের সাহায্য নিয়ে প্রচারে নামতে হয়েছে। হরিসাধনবাবু আমাদের দলের দীর্ঘদিনের একনিষ্ঠ কর্মী। তিনি আমার হয়ে প্রচারের কাজ করছিলেন। তাঁর উপর এই ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা করছি।’’

ওই ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী অরুণ বসু বলেন, ‘‘হরিসাধনবাবু একজন প্রবীণ মানুষ। ওঁর বাড়িতে হামলার ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নয়। ওঁর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলার পিছনে। আমাদের নামে মিথ্যা রটনা হচ্ছে।’’

বাঁশবেড়িয়ার সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনোনয়ন জমার আগে থেকেই এখানে বিরোধীদের উপর হামলা করছে তৃণমূলের লোকজন। ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন চরমে পৌঁছেছে যে, এখন নিজেদের কর্মী-সমর্থকদেরও ছাড়ছে না। ভোটের আগে এ সব ঢাকা দিতেই এখন আমাদের নামে কুৎসা রটাচ্ছে। ওদের যারা টিকিট পায়নি, তারাই এখন হামলার পথ বেছে নিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement