মৃতের পরিবারকে ই-মেল আরআইও-র

চক্ষুদান না হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ

ক্ষুব্ধ সুদীপ্তবাবু আরআইও-তে লিখিত অভিযোগ জানান। মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিভিন্ন দফতরেও তা জানানো হয়। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘দু’জন দৃষ্টিহীন আলো দেখবেন‌, এ জন্যই বাবার চোখ দিতে চেয়েছিলাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

গভীর রাতে ডেথ সার্টিফিকেটের ফোটোকপি দিতে না-পারায় জাঙ্গিপাড়ার প্রণব সরকারের মরণোত্তর চক্ষুদান করা যায়নি। ওই ঘটনায় তাঁর পরিবারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করল রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি (আরআইও)।

Advertisement

আরআইও-র অধিকর্তা অসীম চক্রবর্তী মঙ্গলবার প্রণববাবুর ছেলে সুদীপ্ত সরকারকে ই-মেল করেন। তাতে দুঃখপ্রকাশ করে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আরআইও তদন্ত করছে। দু’জন সিনিয়র চিকিৎসককে নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেই পদক্ষেপ করা হবে। বুধবার পাল্টা ই-মেল পাঠিয়ে সুদীপ্তবাবু জানান, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ফলাফল তাঁকে জানানো হোক। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে অধিকর্তার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানান।

গত ১১ জানুয়ার রাত ১০টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বছর চুয়াত্তরের প্রণববাবু। জীবদ্দশায় তিনি মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেছিলেন। মৃত্যুর পরে তাঁর চক্ষুদানের জন্য অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আরআইও-র চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুদীপ্তবাবুরা। কিন্তু সরকারি নিয়মের গেরোয় তা করা যায়নি। আরআইও-র চিকিৎসকরা জানান, ডেথ সার্টিফিকেটের ফোটোকপি না-দিলে চোখ তোলা যাবে না। গভীর রাতে দোকান খোলা না-থাকায় ওই ফোটোকপি আনতে পারেননি সুদীপ্তবাবুরা। তাঁরা অনুরোধ করেছিলেন, ডেথ সার্টিফিকেটের ছবি মোবাইলে তুলে রাখা হোক। পরের দিন ফোটোকপি পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা রাজি হননি ব‌লে অভিযোগ।

Advertisement

ক্ষুব্ধ সুদীপ্তবাবু আরআইও-তে লিখিত অভিযোগ জানান। মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিভিন্ন দফতরেও তা জানানো হয়। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘দু’জন দৃষ্টিহীন আলো দেখবেন‌, এ জন্যই বাবার চোখ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকদের উদাসীনতায় তা হয়নি। আর কারও ক্ষেত্রে যেন এমন না হয়, সেটা স্বাস্থ্যকর্তারা দেখুন।’’

মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে কাজ করা ‘রাজবলহাট কালচারাল সার্কল ও সেবায়ন’-এর সদস্য সুরজিৎ শীলের অভিযোগ, ‘‘অফিসের সময়ের বাইরে আরআইও-র ফোন পাওয়া যায় না। অথচ ওখানে ২৪ ঘণ্টা ফোন ধরার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। আরআইও-তে বিনামূল্যে কর্নিয়া মেলে। পরিকাঠামো এবং সদিচ্ছার অভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই কাজে থাবা বসাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন