হাওড়ায় সব স্কুলে বসছে স্যানিটারি ভেন্ডিং যন্ত্র

ঋতুস্রাবের দিনগুলিতে সমস্যায় পড়তে হয় ছাত্রীদের। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মাসের ওই কয়েকটি দিন ছাত্রীরা স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। এই সমস্যা দূর করতে এগিয়ে এসেছে হাওড়া জেলা পরিষদ। জেলায় মেয়েদের স্কুলগুলিতে তারা স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০২:০৩
Share:

ঋতুস্রাবের দিনগুলিতে সমস্যায় পড়তে হয় ছাত্রীদের। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মাসের ওই কয়েকটি দিন ছাত্রীরা স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। এই সমস্যা দূর করতে এগিয়ে এসেছে হাওড়া জেলা পরিষদ। জেলায় মেয়েদের স্কুলগুলিতে তারা স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মাত্র ২ টাকার কয়েন দিলে ওই যন্ত্র থেকে মিলবে স্যানিটারি ন্যাপকিন। পাশাপাশি ব্যবহার করা ন্যাপকিন ফেলে দেওয়ার জন্যও যন্ত্র বসানো হচ্ছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর বা শিক্ষা দফতরকে বাদ দিয়ে জেলা পরিষদের তরফে এমন উদ্যোগ কেন?

জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, স্কুলগুলির পরিবেশের উন্নতিতে জেলা পরিষদ বরাবর কাজ করে আসছে। স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পে স্কুলগুলিতে জেলা পরিষদের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতার অভিযান চলছে। ছাত্রছাত্রীদের বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করার পরিকল্পনা হয়েছে। জেলায় মেয়েদের স্কুলগুলিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহের যন্ত্র বসানো সেই পরিকল্পনারই অংশ।

Advertisement

উল্লেখ্য, হাওড়া জেলায় মেয়েদের স্কুলের সংখ্যা ২০০টি। প্রতিটি স্কুলেই স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং যন্ত্র বসানো হবে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদের এক কর্তা জানিয়েছেন, মেয়েদের স্কুলগুলিতে বিভিন্ন কর্মসূচির সময়ে তাঁরা গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকারা তাঁদের কাছে এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন। শুধুমাত্র এই কারণেই প্রায় প্রতিটি ছাত্রী মাসের কয়েকটি দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। আপাতত ঠিক হয়েছে প্রতিটি স্কুলে দুটি করে ভেন্ডিং যন্ত্র বসানো হবে। যার থেকে ২ টাকার কয়েনের বিনিময়ে মিলবে ন্যাপকিন পাবে ছাত্রীরা। অন্য যন্ত্রটিতে ব্যবহার করা ন্যাপকিন ফেলে দেওয়া হবে। দু’টি যন্ত্র মিলিয়ে খরচ পড়বে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রকল্প রূপায়ণে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হবে।

প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য স্থায়ী সমিতির পক্ষ থেকে। জেলা পরিষদের সাধারণ সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছে। টাকার সংস্থান কিছুটা করবে জেলা পরিষদ। এ ছাড়া বিভিন্ন দফতর থেকেও টাকা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীদের সুবিধার্থেই এটা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দফতরের কাছে এর জন্য টাকা চেয়ে আবেদন জানাব। আশা করি টাকার অসুবিধা হবে না।’’

জেলা পরিষদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলা স্কুল শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শান্তনু সিংহ বলেন, ‘‘অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদকে সবরকম সহায়তা করা হবে।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের উদ্যোগটি ভাল। কাজটি আমরাই করতে পারতাম। কিন্তু এই খাতে স্বাস্থ্য দফতরের বরাদ্দ নেই। তবে জেলা পরিষদ যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনওরকম পরামর্শ চায়, তা হলে আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। এমনকী এ বিষয়ে স্কুলগুলিতে আলোচনাচক্রের আয়োজন করতে হলেও আমরা রাজি আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন