শুক্রবার অবরোধের ছবিটি তুলেছেন সুশান্ত সরকার।
চার দিন ধরে কলে জল নেই। পঞ্চায়েতে বার বার জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি। ক্ষোভে এবং জলের দাবিতে জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে হুগলির পান্ডুয়ার ঘটনা। অবরোধের জেরে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে যানজটে আটকে পড়ে হয়রান হতে হয় নিত্যযাত্রী থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত বিডিও-র হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। গ্রামবাসীদের জন্য অন্য উপায়ে জলের ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসনের তরফে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের কুলটি রোড, কামারপাড়া, তেতেরপাড়, ক্যানেলপাড়, দিঘিড়পাড়-সহ প্রভৃতি এলাকা গত চার দিন ধরেই কার্যত নির্জলা। এই সব এলাকায় বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ করার কথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের রিজার্ভার থেকেই ওই জল দেওয়ার বন্দোবস্ত করে পঞ্চায়েত। সকাল ৬টা থেকে ৯টা, বেলা ১২টা থেকে ২টো এবং বিকেল ৪টে থেকে ৫টা এই তিন পর্বে বাড়ি বাড়ি জল দেওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার থেকে কলে একেবারই জল আসছে। ফলে পানের জন্য অথবা দৈনন্দিন অন্য কাজে জসের অভাবে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ অবরোধ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই মোটর খারাপ হওয়ায় জল না পেয়ে তাঁদের ভুগতে হয়। কামারপাড়ার বাসিন্দা সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল থেকে কলে একফোঁটা জল নেই। জল ছাড়া চলে কী চলে? পঞ্চায়েতে বার বার জানিয়েও ফল হয়নি। বলা হচ্ছে, মেশিন খারাপ। অথচ খারাপ হওয়া মেশিন সারানোর কোনও উদ্যোগ দেখছি না। জলের বিকল্প ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না।’’ বিজয় শর্মা নামে অপর এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘‘গ্রামবাসীদের জল দেওয়ার দায়িত্ব পঞ্চায়েতের। যত দিন জল সরবরাহ স্বাভাবিক না হচ্ছে, বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে অবশ্য দাবি, রিজার্ভারের মোটর বিকল হয়ে যাওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে শীঘ্রই মোটর মেরামত করে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরুণ সাহার দাবি, ‘‘মঙ্গলবার থেকে নয়, মোটর বিভ্রাটে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আশা করছি, শনিবার সকাল থেকেই জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’
এ দিন অবরোধের খবর পেয়ে পান্ডুয়া থানার ওসি সুমন রায়চৌধুরী বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কিন্তু প্রশাসনের আশ্বাস না পেলে অবরোধ তুলতে রাজি হননি বিক্ষোভকারীরা। শেষ পর্যন্ত বিডিও গৌরাঙ্গ ঘোষ পান্ডুয়া সুপার মার্কেট কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানান, তাঁরা যেন জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে দেন ওই এলাকায়। সেইসঙ্গে বিকল মোটর দ্রুত সারানোরও নির্দেশ দেন তিনি। এর পরেই সকাল ১০টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।