মাঠ ভরছে গাড়িতে, বিপাকে স্কুল

সবুজ ঘাস হারিয়ে গিয়েছে কবেই! উদয়নারায়ণপুরের সারদাচরণ ইন্সস্টিটিউট হাইস্কুলের খেলার মাঠ এখন গাড়ির গ্যারাজ। মাঠের আকাশ ধুলোয় ভরা। সেই মাঠ কী ভাবে উদ্ধার করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। নানা মহলে দরবার করছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

Advertisement

নুরুল আবসার

উদয়নারায়ণপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

দখল: উদয়নারায়ণপুরে খেলার মাঠে রাখা আছে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

সবুজ ঘাস হারিয়ে গিয়েছে কবেই! উদয়নারায়ণপুরের সারদাচরণ ইন্সস্টিটিউট হাইস্কুলের খেলার মাঠ এখন গাড়ির গ্যারাজ। মাঠের আকাশ ধুলোয় ভরা। সেই মাঠ কী ভাবে উদ্ধার করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। নানা মহলে দরবার করছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

Advertisement

উদয়নারায়ণপুর শহরের কেন্দ্রে এক চিলতে ফাঁকা জমি বলতে প্রায় তিন বিঘার ওই মাঠ। মাঠ ঘিরে রয়েছে থানা, ব্লক অফিস, পঞ্চায়েত সমিতির অফিস। স্কুলটি আধ কিলোমিটার দূরে। এক সময়ে মাঠে ফুটবল খেলা হতো। মরচে পড়ে যাওয়া লোহার দু’টি বারপোস্ট এখনও তার সাক্ষ্য দেয়। গোটা মাঠ ছিল সবুজ ঘাসে ঢাকা। এখন সবুজের চিহ্নমাত্র নেই। মাঠ ভরে থাকে থানা, ব্লক অফিস বা পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের গাড়িতে। আসে বাইরের গাড়িও। বহু ব্যবসায়ীও এখানে গাড়ি এনে পণ্য খালাস করেন। মাঠের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ধুলো থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষকে মুখে রুমাল চাপা দিতে হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত জানা বলেন, ‘‘মাঠটি বাঁচানোর মতো টাকা আমাদের নেই। মাঠে যাতে গাড়ি রাখা না-হয় এবং চারদিকে ভাল করে সীমানা-প্রাচীর দিয়ে মাঠটিকে রক্ষা করার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন মহলে বহুবার আবেদন করেছি। সবাই আশ্বাস দিয়েছেন। কাজ হয়নি।’’

Advertisement

কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মাঠে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা খেলাধুলো করত। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হতো। উদয়নারাণপুর স্কুল ফুটবল লিগ ছাড়াও আরও কয়েকটি ফুটবল প্রতিযোগিতা হতো। এখন সে সব বন্ধ। শুধু সারদাচরণ ইন্সস্টিটিউট মাঠের মাঝখানে একটি ছোট্ট জায়গা বেছে নিয়ে কোনও রকমে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সংসদের আবেদনমতো বছর পনেরো আগে মাঠটিকে ইটের দেওয়ালে ঘিরে দিয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতি। কিন্তু পরে যে তাঁরা আর মাঠটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেননি, সে কথা মেনে নিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই পাঁচিল কবেই ভেঙে গিয়েছে। প্রাক্তন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তারক মেটে বলেন, ‘‘শহরে এত বড় ফাঁকা জায়গা আর নেই। সেখান থেকে শুধু ধুলো ওড়ে। এতে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।’’

কেন গাড়ি অন্যত্র রাখা হয় না? হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, জায়গার অভাবেই ওই মাঠে গাড়ি রাখা হয়। বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে। পেয়ে গেলেই মাঠ ছেড়ে দেওয়া হবে। বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক আমাকে মাঠটি সংরক্ষণের ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। মাঠটিকে ফের ঘিরে দেওয়া হলে রক্ষা করা যাবে। এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।’’ ক্রীড়াপ্রেমীরাও চান, ফিরে আসুক সবুজ মাঠ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন