নাশকতার আশঙ্কায় তারকেশ্বর মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়াল জেলা পুলিশ-প্রশাসন।
এমনকী নিরাপত্তার নিরিখে মন্দিরের ঢিলেঢালা পরিস্থিতি এড়াতে কতকগুলি নির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা জেলা পুলিশের তরফে বলা হয়েছে মন্দির পরিচালন কমিটিকে। বর্তমানে মন্দিরের ঢোকার বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। সেগুলি বন্ধ করে কেবলমাত্র স্থায়ী দুটি-র কথা বলা হয়েছে। তাতে পুলিশ বা নিরাপত্তা কর্মীদের নজরদারির সুবিধা হবে। এ ছাড়াও সি সি টিভির সংখ্যা বাড়ানো এবং তা চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। মন্দিরের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজনক হতে পারে এমন কিছু কেউ যাতে না নিয়ে মন্দির চত্বরে ঢুকে পড়তে পারে সে জন্য প্রবেশ পথে কড়া নজরদারির কথা ভাবা হচ্ছে।
বস্তুত ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শৈবতীর্থ তারকেশ্বর। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা ভারতেরই নানাপ্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষজন এখানে প্রতিদিন ভিড় করেন। এই মন্দিরের যতটা গুরুত্ব রয়েছে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিরাপত্তা নিয়ে কিন্তু এতদিন সেইভাবে ভাবা হয়নি। দুধ পুকুরের মত পবিত্র ঐতিহাসিক পুকুরে নজরদারি এড়িয়ে পুণ্যার্থীর ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। তার উপর চৈত্র এবং শ্রাবণ মাসে মেলার সময় প্রতিদিন লাখো মানুষের সমাগম হয় এই পুণ্যতীর্থে। প্রতি বছরই ভিড়ের চাপে অসুস্থ হওয়া বা মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটে যায়। তখনকার মতো বিষয়টি নিয়ে হইচই হয়। পরবর্তী সময়ে আবার সবকিছু থিতিয়ে যায়।
তারকেশ্বর মন্দিরের চারপাশে সরু অপরিসর গলিপথ নিরাপত্তা কর্মীদের কাজকে অনেক কঠিন করে দেয়। তার উপর এই মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের সার্বিক পরিকল্পনা এ পর্যন্ত করা হয়নি। তার ফলে জেলা পুলিশ যেটুকু নজরদারি চালায় তার উপরই নির্ভর করে মন্দিরের নিরাপত্তা। সংবাদ মাধ্যমে নাশকতার আশঙ্কার খবরের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার থেকেই মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা সোমবার বলেন,‘‘আমরা রাজ্য বা কেন্দ্রের কোনও গোয়েন্দা সংস্থার থেকেই তারকেশ্বর মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়ে আশঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও সর্তকতার বিজ্ঞপ্তি পাইনি। কিন্তু যেহেতু সাংবাদ মধ্যমের প্রচারে বিষয়টি এসেছে। তাই আমরা বিষয়টিকে উপেক্ষা না করে মন্দির চত্বরে সর্তকতা এবং নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়িয়েছি। ’’
তবে তারকেশ্বর মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়টি যাতে ভবিষ্যতে ঢেলে সাজা হয় সেই ব্যাপারে পুলিশ পদক্ষেপ শুরু করেছে। কোনও মন্দিরের অনেক প্রবেশ পথ চালু থাকলে সেই ব্যবস্থায় নিরাপত্তার বিষয়টি ঢিলেঢালা হতে বাধ্য। তাই বিষয়টি এড়াতে রেলপথে মন্দিরে ঢোকা এবং সড়ক পথে মন্দিরে আসার একটি করে প্রবেশ পথ রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেখানে প্রবেশ পথে স্ক্যানার-সহ নানা অত্যাধুনিক ব্যবস্থার করা ভাবা হচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে মন্দির কর্তৃপক্ষের নিজস্ব কোনও নিরাপত্তা কর্মী নেই। যা আদর্শ পরিস্থিতিতে ঠিক নয়। পুলিশের পাশাপাশি সেই ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে মন্দির পরিচালন কমিটির নিজস্ব কর্মীও রাখাটা জরুরি। সেই প্রসঙ্গটিও ভেবে দেখার সুযোগ রয়েছে বলে এখন অনেকেই মনে করেন।