১৬ বছর পার, দোকান পাননি ৩৫ ব্যবসায়ী

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দননগর হাসাপাতালের গেটের সামনে টালির চালের দরমার বেড়ার ওই দোকানগুলি দীর্ঘদিনের পুরনো। মূলত রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং হাসপাতালে আসা রোগীরাই কেনাকাটা করেন। রয়েছে খাবার দোকান, জামাকাপড়ের দোকান, সেলুন, জিনিসপত্রের দোকান।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০১:২২
Share:

সমস্যায়: পড়ে রয়েছে দোকানঘর। নিজস্ব চিত্র

দেখতে দেখতে ১৬ বছর পার। পুরসভাকে আগাম টাকা দিয়েও এখনও পাকা দোকানঘর হাতে পেলেন না চন্দননগরের হাসপাতাল গেট সংলগ্ন এলাকার ৩৫ জন ব্যবসায়ী। অস্থায়ী দোকানেই তাঁদের কারবার চালাতে হচ্ছে। পুরসভার সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

Advertisement

মেয়র রাম চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘নতুন দোকান তৈরির ক্ষেত্রে বাম পরিচালিত পুরবোর্ডের আমল থেকে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল তার অনেকটাই সমাধান হয়ে গিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই অসমাপ্ত দোকান তৈরির কাজ শেষ করে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দননগর হাসাপাতালের গেটের সামনে টালির চালের দরমার বেড়ার ওই দোকানগুলি দীর্ঘদিনের পুরনো। মূলত রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং হাসপাতালে আসা রোগীরাই কেনাকাটা করেন। রয়েছে খাবার দোকান, জামাকাপড়ের দোকান, সেলুন, জিনিসপত্রের দোকান। হাসপাতালের সামনে ‘দৃশ্যদূষণ’ রুখতে ২০০২ সালে বাম পরিচালিত পুরবোর্ড ওই দোকানগুলি সরিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের টাকাতেই ৫৪টি স্থায়ী দোকানঘর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম ধাপে ৩৫টি দোকান তৈরির পরিকল্পনা হয়। সেই কাজ শেষ হয়ে গেলে বাকি ১৯টি দোকান তৈরির কাজ শুরুর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এখনও প্রথম দফার কাজই শেষ হয়নি।

Advertisement

হাসপাতাল মাঠের পশ্চিম প্রান্তে নতুন দোকানগুলি তৈরির কাজ শুরু হলেও বাম আমলেই থমকে যায়। পুরসভার বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের রমেশ তিওয়ারির দাবি, সেই সময়ে ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা ত্রুটিপূর্ণ ছিল। কাজ বন্ধ রাখা হয়। অনেকে পরিবারের লোকজনের নামে দোকান চেয়েছিলেন।

বামেদের হাত থেকে পুরবোর্ডের ক্ষমতা অনেকদিন আগেই চলে এসেছে তৃণমূলের হাতে। কিন্তু স্থায়ী দোকানঘর হাতে না-পাওয়ায় একজোট হন ব্যবসায়ীরা। গড়েছেন ‘হাসপাতাল মাঠ মার্কেট স্টল অ্যাসোসিয়েশন’। ইতিমধ্যে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের কাছে একাধিকবার দরবারও করেছেন তাঁরা। ২০১৬ সালে পুরসভার কথামতো তাঁরা বাড়তি টাকাও জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।

ওই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘‘২০০২ সালে পুরসভা দোকানপিছু ২৬ হাজার ৪০০ টাকা করে চেয়েছিল। প্রথম দফায় তার অর্ধেক টাকা দিয়ে আবেদন করি আমরা। বাকি টাকা দোকান হাতে পাওয়ার পরে দেওয়ার কথা ছিল। দু’বছর আগে বর্তমান পুরবোর্ড দ্বিতীয় কিস্তিতে ৫৫ হাজার টাকা চায়। আমরা দিতে রাজি। কিন্তু কাজ তো বন্ধ!’’

ওই সংগঠনের সম্পাদক কাশীনাথ অধিকারী বলেন, ‘‘শহরের ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে অস্থায়ী দোকান তুলে স্থায়ী দোকানঘর নির্মাণ নিয়ে পুরসভার সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু দোকান না-পাওয়ায় সকলে হতাশ হয়ে পড়েছেন। দেখি, বর্তমান পুরবোর্ড কী করে!’’

পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমান বাজারদরের কথা মাথায় রেখেই ব্যবসায়ীদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বাড়াতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই প্রথম দফার কাজ শেষ করা হবে। তার পরে বাকি ১৯টি দোকানও তৈরির কাজ শুরু হবে বলে পুরকর্তারা
আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন