বেলুড় হাসপাতালে স্ট্যান্ডিং কমিটি

প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা করাতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করলেও প্রয়োজনে ভর্তি হওয়ার উপায় নেই। কারণ, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নেই, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স নেই, সাফাই-কর্মী মাত্র দু’জন।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৫:৩১
Share:

নামেই তালপুকুর, কিন্তু ঘটি ডোবে না!

Advertisement

নামেই হাসপাতাল! প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা করাতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করলেও প্রয়োজনে ভর্তি হওয়ার উপায় নেই। কারণ, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নেই, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স নেই, সাফাই-কর্মী মাত্র দু’জন। এমনই দশা বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালের। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্টেট জেনারেলের তকমা থাকলেও পরিষেবার মান কার্যত তলানিতে ঠেকেছে।

এ বার এই নেই-রাজ্যের হাসপাতালটির মান ফেরাতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। ফাঁকা জমিতে যোগা ও নেচারোপ্যাথি কলেজ-সহ চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিকাঠামো বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বৈশালী ডালমিয়া বলেন, ‘‘বাম আমলে হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে কারও মাথা ব্যথা ছিল না। অথচ বালি পুর ও পঞ্চায়েতের মানুষের ভরসা এটি।’’ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেলুড় হাসপাতালের উন্নয়নের একটি রূপরেখা তৈরি হয়েছে। সেই মতোই কাজও শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রায় ৫.৩৪ একর জমির একাংশে রয়েছে ১৫ শয্যার এই হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন অসংখ্য রোগী বহির্বিভাগে আসেন। বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। রয়েছে প্রসূতিদের বহির্বিভাগ এবং দাঁতের চিকিৎসার ব্যবস্থা। ভরসায় ছ’জন মেডিক্যাল অফিসার। নেই কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিন বছর ধরে বন্ধ অপারেশন থিয়েটার। রাজ্য জুড়ে চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নত যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু হলেও এখনও এই হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে যন্ত্রও নেই। বিকল পড়ে ইউএসজি যন্ত্রটিও।

প্রসূতিরা প্রথম কয়েক মাস ওই হাসপাতালের ‘এমওপিপি’ ইউনিটে চিকিৎসা করালেও অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিতে চান না। তাই প্রসবের সময়ে অন্যত্র চলে যান তাঁরা। নবজাতকের জন্যও নেই কোনও ব্যবস্থা। উন্নয়ন কী ভাবে করা যাবে, তা দেখতে বৃহস্পতিবার বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল মাঝি বলেন, ‘‘প্রসূতিদের অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো ও এসএনএসইউ গড়ে তোলা ও চিকিৎসার অন্য পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’

একটি দোতলা ভবন তৈরি হয়েও তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। আরও এক সমস্যা, হাসপাতালের ভিতরে রাখা হয় বাইরের গাড়ি। চত্বরে তৈরি হয়েছে টোটোর স্ট্যান্ড। কাউন্সিলর প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার বলেন, ‘‘ভিতরে টোটো স্ট্যান্ড থাকা উচিত না। এক ব্যক্তির একাধিক ও এলাকার বাইরের টোটোও আছে। তবে স্থানীয় চালকদের বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন