গড়চুমুক সাজাতে বাজি উত্তমকুমারের ‘বিশ্বপ্রেম’

ভোরের নদীতে লঞ্চে দাঁড়িয়ে উত্তমকুমার গাইছেন, ‘কী আশায় বাঁধি খেলাঘর...’। পিছনে দাঁড়িয়ে শর্মিলা ঠাকুর। প্রায় ৪২ বছর আগে ‘অমানুষ’ ছবিতে ব্যবহৃত ‘বিশ্বপ্রেম’ নামে ওই লঞ্চটিকেই গড়চুমুকের পর্যটন প্রসারে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পর্যটন দফতরের কর্তারা।

Advertisement

নুরুল আবসার

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share:

টান: গড়চুমুক পরিদর্শনে পর্যটন দফতরের কর্তারা। ছবি: সুব্রত জানা

নতুন করে গড়চুমুককে সাজাতে মহানায়কের ‘বিশ্বপ্রেম’কেও হাতিয়ার করছে পর্যটন দফতর।

Advertisement

ভোরের নদীতে লঞ্চে দাঁড়িয়ে উত্তমকুমার গাইছেন, ‘কী আশায় বাঁধি খেলাঘর...’। পিছনে দাঁড়িয়ে শর্মিলা ঠাকুর। প্রায় ৪২ বছর আগে ‘অমানুষ’ ছবিতে ব্যবহৃত ‘বিশ্বপ্রেম’ নামে ওই লঞ্চটিকেই গড়চুমুকের পর্যটন প্রসারে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পর্যটন দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, লঞ্চটিকে নতুন করে সাজিয়ে উত্তমকুমারের নানা মুডের ছবি রাখা হবে। নেপথ্যে লাউডস্পিকারে বাজানো হবে ‘‘কী আশায় বাঁধি খেলাঘর...’। ধারাভাষ্যের মাধ্যমে উত্তমকুমারের এই লঞ্চে শ্যুটিংয়ের গল্প বলা হবে। শুনতে শুনতে পর্যটকেরা নদীতে ঘুরতে পারবেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগ্রহে গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্রকে সাজানো হচ্ছে। কী ভাবে সেই কাজ হবে তার রূপরেখা ঠিক করতে সোমবার গড়চুমুকে আসেন রাজ্য পর্যটন দফতরের কর্তারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায়, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য। ওই দফতর সূত্রের খবর, তিনটি পর্যায়ে সংস্কারের কাজ হবে। এক-একটি পর্যায়ের জন্য খরচ হবে গড়ে পাঁচ কোটি টাকা করে। দামোদর ও গঙ্গায় নৌকাবিহার, রোপওয়ে, নদী দেখার জন্য নজর-মিনার, নদীর ধারে পার্ক, কটেজ এবং কাফেটরিয়া গড়ারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিদর্শনের ভিত্তিতে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট বানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন করলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

Advertisement

এ দিন পরিদর্শন চলাকালীন পর্যটন দফতরের কর্তারা পুলিশের কাছ থেকে মহানায়কের স্মৃতিধন্য ওই লঞ্চের কথা জানতে পারেন। তারপরেই ঠিক হয় পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত আকর্ষণ হিসাবে ব্যবহার করা হবে এই লঞ্চটিকে। গত ১০ বছর ধরে ওই লঞ্চ নিয়ে গঙ্গা এবং দামোদরে নজরদারি চালাচ্ছে শ্যামপুর থানার পুলিশ।

লঞ্চটির মালিক ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা রাজকুমার মান্না। তিনি লঞ্চটি ভাড়া দিয়েছেন হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশকে। রাজকুমারবাবুর জানান, ১৯৭৩ সালে তাঁর বাবা শঙ্কর মান্নার কাছ থেকে লঞ্চটি ২৪ দিনের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন পরিচালক শক্তি সামন্ত। গোসাবার ঝাউখালি গ্রামে ‘অমানুষ’ ছবির শ্যুটিং হয়েছিল। মাতলা নদীতে চালানো হয়েছিল লঞ্চটি।

পর্যটন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘লঞ্চটি কেনা বা ভাড়া নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। বিনিময়ে পুলিশকে একটি বিকল্প লঞ্চ দেওয়া হবে।’’ রাজকুমারবাবু অবশ্য লঞ্চটি বিক্রি করতে উৎসাহী নন। তিনি বলেন, ‘‘এই লঞ্চ আমাদের কাছেও সমান মূল্যবান। এটি কোনও দিন বিক্রি করব না। তবে ভাড়া দিতে আপত্তি নেই।’’

মহানায়কের ‘বিশ্বপ্রেম’ গড়চুমুকের ভাসার অপেক্ষায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন