গত ১৮ মাস ধরে অচলাবস্থা খানাকুলের স্কুলে

নির্দিষ্ট দিনে এসেও ছাত্রীরা জানল পরীক্ষা হবে না

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিদ্যালয়ের বাৎসরিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট ছিল। সেইমতো ছাত্রীরা স্কুলে চলেও আসে। কিন্তু এসে নোটিস দেখে তারা জানতে পারে এ দিন নয়, পরীক্ষা শুরু হবে সোমবার। এ নিয়ে হইচই শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খানাকুল শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৮
Share:

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিদ্যালয়ের বাৎসরিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট ছিল। সেইমতো ছাত্রীরা স্কুলে চলেও আসে। কিন্তু এসে নোটিস দেখে তারা জানতে পারে এ দিন নয়, পরীক্ষা শুরু হবে সোমবার। এ নিয়ে হইচই শুরু হয়। অভিভাবকেরা স্কুলে হাজির হয়ে জানতে পারেন, প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়নি। তাই পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। এতে খানাকুলের রাজহাটি জ্ঞানদা বালিকা বিদ্যালয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক সকলেই।

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঘেরাও করে রাখা হয় শিক্ষিকাদের। শিক্ষিকারা অভিভাবকদের জানান, স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি অলককুমার শাসমলের দেওয়া ওই নোটিসের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। বিক্ষোভের জেরে দুপুর নাগাদ আরামবাগের অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক শ্যামলী গোলাই, খানাকুলে ২ এর যুগ্ম বিডিও রামকৃষ্ণ বসু এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছন। শিক্ষিকাদের ঘেরাও মুক্ত করে স্থানীয় মানুষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। অভিভাবকদের পক্ষে লক্ষণ মাইতি, তুফান মণ্ডল, প্রতিমা পণ্ডিত দাবি করেন, স্কুলে অবিলম্বে টিচার ইনচার্জ হিসাবে কাউকে বসাতে হবে। এ বিষয়ে বিডিও সুজিত রায় বলেন, “কোনও শিক্ষিকাই টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে চাননি। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।”

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে ওই স্কুলে। এখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৬৫০ জন। স্কুলের স্থায়ী শিক্ষিকা ৯ জন, আংশিক সময়ের শিক্ষিকা ৩ জন এবং পার্শ্বশিক্ষক ৪ জন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা অবসর নেওয়ার পর টিচার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব নেন ইংরাজির শিক্ষিকা অনিতা ভৌমিক। কিন্তু স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির সঙ্গে নানা বিষয়ে মতান্তরে তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুলে আসছেন না। অন্য শিক্ষিকারাও কেউই টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। ফলে পঠনপাঠন, মিড ডে মিল-সহ অন্যা কাজকর্ম ঠিকঠাক চলছে না। যা নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। মাস কয়েক আগেই শিক্ষিকারা কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের স্টাফ রুমে তালা মেরে দেন কিছু অভিভাবক।

Advertisement

এ দিন পরীক্ষা না হওয়ার কারণ হিসাবে অলকবাবু বলেন, ‘‘শিক্ষিকারা তিন দিন আগে প্রশ্নপত্র তৈরি করে দিয়েছেন। এত কম সময়ের মধ্যে তা ছাপা হয়নি। প্রায় সাড়ে ৬০০ ছাত্রীর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কাগজেরও ব্যবস্থা ছিল না। বাধ্য হয়েই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ তিনি জানান, কোন শিক্ষিকাই টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। গত ১৮ মাস ধরে স্কুলের এই অচলবস্থা নিয়ে বিডিও থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে বারবার দরবার করেও সুরাহা হয়নি।

স্কুলের এমন সমস্যা নিয়ে হুগলি জেলা স্কুল পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বিদ্যালয়টির সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষা দফতরকেও বিষটি জানানো হয়েছে। দ্রুত যাতে সুষ্ঠু পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়, তার চেষ্টা হচ্ছে।’’

পরীক্ষা বন্ধের নোটিস আগাম টাঙানো হয়নি কেন?

এর উত্তরে অলকবাবু বলেন, “প্রতিদিন দেড়টার সময় ছুটি দিয়ে স্কুল বন্ধ করে চলে যাচ্ছেন শিক্ষিকারা। কালই নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’

ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু। বৃহস্পতিবার সকালে আরামবাগের দৌলতপুর রেলসেতুর কাছে ট্রেনের ধাক্কায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়ছে, মৃতের নাম পূর্ণ পাল (৪৯)। তাঁর বাড়ি দৌলতপুরেই। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অসাবধানতায় গোঘাটগামী ট্রেনের ধাক্কায় তিনি জখম হন। তাঁকে স্থানীয় লোকজন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন