হুগলি-চুঁচুড়া

গুরু-শিষ্য লড়াইয়ে উন্নয়নই অস্ত্র

গুরু-শিষ্যের লড়াই নিয়ে সরগরম এলাকা। যাঁর কাছে শিক্ষার প্রথম পাঠ সেই শিক্ষাগুরুর বিরুদ্ধে ফের ভোটের ময়দানে ছাত্র। জ্ঞানেন্দ্রলাল চক্রবর্ত্তীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ছাত্র সঞ্জয় পাল। আসন্ন পুর নির্বাচনে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সঞ্জয় পাল লড়ছেন সিপিএমের প্রার্থী ও তাঁর মাস্টারমশাই জ্ঞানেন্দ্রলাল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। গত পুরনির্বাচনেও তাঁদের দ্বৈরথ অব্যাহত ছিল। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছিলেন গুরুই। গুরুর কাছে ছাত্র হেরে গিয়েছিলেন ১৩৮ ভোটে।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৩
Share:

জ্ঞানেন্দ্রলাল চক্রবর্তী (শিক্ষক) ও সঞ্জয় পাল (ছাত্র)।

গুরু-শিষ্যের লড়াই নিয়ে সরগরম এলাকা। যাঁর কাছে শিক্ষার প্রথম পাঠ সেই শিক্ষাগুরুর বিরুদ্ধে ফের ভোটের ময়দানে ছাত্র। জ্ঞানেন্দ্রলাল চক্রবর্ত্তীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ছাত্র সঞ্জয় পাল। আসন্ন পুর নির্বাচনে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সঞ্জয় পাল লড়ছেন সিপিএমের প্রার্থী ও তাঁর মাস্টারমশাই জ্ঞানেন্দ্রলাল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। গত পুরনির্বাচনেও তাঁদের দ্বৈরথ অব্যাহত ছিল। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছিলেন গুরুই। গুরুর কাছে ছাত্র হেরে গিয়েছিলেন ১৩৮ ভোটে।

Advertisement

তবে ভোটে হারলেও লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে যাননি সঞ্জয়বাবু। পরীক্ষায় পাশ না করলেও এলাকার মানুষের পাশে থেকে তাদের দুঃখ-দুর্দশার সমাধান করতে সর্বদাই চেষ্টা করেছেন। এবারও তাঁর লড়াই গুরুর বিরুদ্ধে। তবে দু’জনেই একমত, এটা রাজনৈতিক যুদ্ধ, ব্যক্তিগত লড়াই নয়। যে যার দলীয় আদশর্কে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন। চুঁচুড়া পুরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গোপীনাথপুরের বাসিন্দা সঞ্জয়ের বাবা মণীন্দ্রলাল চক্রবর্তী ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁর স্মরণেই এলাকার নাম মণীন্দ্রপল্লি। জ্ঞানেন্দ্রবাবু আদিসপ্তগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন। যেখানে তাঁর প্রিয় ছাত্র ছিলেন সঞ্জয়। ১৯৯৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চশিক্ষালাভের জন্য অন্যত্র চলে যান। শিক্ষক এবং ছাত্রের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২০১৩ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন জ্ঞানেন্দ্রবাবু। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্ত্বেও মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে শিক্ষাগুরুকে প্রণাম করে তাঁর আর্শীবাদ নিয়েছেন সঞ্জয়।

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষনগর, গোপীনাথপুর, শরৎপল্লি, লেনিনপল্লি, বনমসজিত, মণীন্দ্রপল্লি, অন্নপূর্ণা কলোনি এবং ব্যান্ডেল চার্চ এলাকা নিয়ে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বাস। এর মধ্যে ভোটার প্রায় ৮ হাজার। আর্থিক অনটনের কারণে এক সময় সঞ্জয়বাবু হুগলির কৃষ্ণপুর বাজারে সবজি বিক্রি করতেন। পাশাপাশি একটি বিমা সংস্থায় এজেন্টের কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে এলাকার কোনও অসুস্থকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে তিনিই ভরসা। এ হেন ছাত্রের সম্পর্কে গতবারের জয়ী গুরু কী বলছেন?

Advertisement

জ্ঞানেন্দ্রলালবাবুর কথায়, “এটা রাজনৈতিক যুদ্ধ। সঞ্জয় ওর দলের হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আমি আমার দলের হয়ে। স্কুলে ও ছিল আমার প্রিয় ছাত্র। ও কী ভাবে দেখছে জানি না। তবে যুদ্ধে যেই-ই জিতুক, এলাকার মানুষের পাশে দাড়িয়ে একযোগে উন্নয়ন করতে হবে।’’

কী বলছেন ছাত্র? সঞ্জয় বলেন, ‘‘সিপিএম প্রার্থী জ্ঞানেন্দ্রবাবু আমার শিক্ষাগুরু। ওঁর বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই। হার-জিত যাই হোক, এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন