আরামবাগে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের নজরদারি নিয়ে

বাসের ছাদ থেকে পড়ে জখম ছাত্র

ছাদে যাত্রী তুলে দুরন্ত গতিতে ছুটছে বাস— আরামবাগ শহর-সহ গোটা মহকুমা জুড়ে এমন দৃশ্য প্রতিদিনের। বৃহস্পতিবার সকালে তেমনই একটি বাসের ছাদ থেকে নামতে গিয়ে এক ছাত্রের গুরুতর জখম হওয়ার ঘটনায় আরামবাগ শহরে পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

বিপজ্জনক: দুর্ঘটনার পরও হুঁশ ফেরেনি। বাসের ছাদে এভাবেই সওয়ার যাত্রী। চোখ বুজে প্রশাসন। ছবি: মোহন দাস

ছাদে যাত্রী তুলে দুরন্ত গতিতে ছুটছে বাস— আরামবাগ শহর-সহ গোটা মহকুমা জুড়ে এমন দৃশ্য প্রতিদিনের।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে তেমনই একটি বাসের ছাদ থেকে নামতে গিয়ে এক ছাত্রের গুরুতর জখম হওয়ার ঘটনায় আরামবাগ শহরে পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। বহু যাত্রীরই অভিযোগ, বাসে ছাদে যাত্রী তোলা নিয়ে বাস-মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর যেমন উদাসীন, তেমনই পুলিশ প্রশাসনও নির্বিকার।

এসডিপিও (আরামবাগ) হরেকৃষ্ণ পাই অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘অনেকবার তল্লাশি চালানো হয়েছে। বাস-মালিকদের সতর্কও করা হয়েছে। এ বার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হুগলি জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিক শুভেন্দুশেখর দাস বলেন, “বিধি মেনে বাস চালাতে আগেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন বাস-মালিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। তাতেও কাজ না হলে বাসের ছাদে যাত্রী তোলা বন্ধ করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে আরামবাগ শহরের গৌরহাটি মোড় সংলগ্ন লিঙ্ক রোডে ২৪ নম্বর (আরামবাগ-বন্দর) রুটের একটি বাসের ছাদ থেকে নামতে গিয়ে প্রদীপ চক্রবর্তী নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র গুরুতর জখম হয়। আরামবাগের সালেপুরের বাসিন্দা প্রদীপ টিউশন নিতে আসছিল। তাকে প্রথমে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এই দুর্ঘটনার পরেই আরামবাগে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন বা ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুলিশেরই হিসেব বলছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত আরামবাগ মহকুমায় ৬৪টি পথ দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিনের দুর্ঘটনার পরে বাসের ছাদে যাত্রী তোলা নিয়ে কী বলছে বাস-মালিক সংগঠনগুলি?

২৪ নম্বর রুটের বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক অনন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “পরিবহণ দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে এক সময় বাসের পিছনের সিঁড়ি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মালপত্র তুলতে অসুবিধা হওয়ায় ফের লাগানো হয়। যাত্রীরা নিজেরাই ছাদে উঠতে চাইলে আমরা কী করব?’’ ১৬/২০ রুটের বাস-মালিক সংগঠনের এক কর্তা আবার সব দায় কন্ডাক্টর-খালাসিদের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কন্ডাক্টর-হেল্পারদের মদতে যাত্রীরা মালিককে ফাঁকি দিতে বাসের ছাদে উঠতে উৎসাহিত করছেন। ওখানে কম ভাড়ায় যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন