যজ্ঞ: অলঙ্কারের সাজে অভিষেক জগন্নাথের। নিজস্ব চিত্র।
প্রতীক্ষার অবসান। রাত পোহালেই টান পড়বে রথের রশিতে। সোজারথের প্রস্তুতিতে মাহেশে চলছে শেষ তুলির টান।
রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে পূণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দেওয়া থেকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে মাহেশের আকাশে উড়বে ড্রোন ক্যামেরা।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, এক হাজার দু’শো পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। নেতৃত্বে থাকবেন আইজি পদমর্যাদার অফিসার পীযূষ পাণ্ডে। থাকবেন জেলার পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অতুল ভি। ডিএসপি পদমর্যাদার ৭-৮ জন অফিসার থাকবেন। ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার প্রায় পনেরো জন, সাব-ইনস্পেক্টর (এসআই) ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (এএসআই) পদমর্যাদার শতাধিক অফিসার থাকবেন। পকেটমারি বা মহিলাদের শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা রুখতে ভিড়ে মিশে থাকবেন সাদা পোশাকের পুরুষ এবং মহিলা পুলিশ। জগন্নাথবাড়ি থেকে মাসিরবাড়ি পর্যন্ত জিটি রোডের দু’ধারে বাড়ির ছাদ থেকে নজরদারি চালানো হবে।
পুলিশ কর্মীদের পাশাপাশি গোটা রাস্তায় এবং জগন্নাথ মন্দির, মাসির বাড়ির মন্দির চত্ত্বরে নজর রাখবে গোটা কুড়ি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। থাকছে ছ’টি ওয়াচ টাওয়ার এবং তিনটি পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র। ভিড় সামাল দিতে সকাল ১০টা থেকেই জিটি রোডে নো-এন্ট্রি করা হবে। অন্যান্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিড়ের সুযোগে ছিনতাইবাজ বা পকেটমাররা টাকা, গয়না হাতানোর সুযোগ খোঁজে। তারা যাতে সুবিধা করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ তৎপর থাকবে।’’ ওই অফিসারের বক্তব্য, ‘‘মাহেশের রথে ড্রোন ক্যামেরার নজরদারি এ বারেই প্রথম। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও পোক্ত হবে। পথের ক্যামেরার ছবির প্রতি নজর থাকবে আমাদের। কোনও বেচাল দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সড়ক পথের পাশাপাশি ফেরিঘাটগুলিতেও নজরদারি চালাবে পুলিশ। প্রত্যেকটি ফেরিঘাটে পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বাহিনী গঙ্গায় থাকবে স্পিডবোট নিয়ে। পুলিশের লঞ্চও থাকবে গঙ্গায়।
মাহেশের রথযাত্রা এ বার ৬২১ বছরে পড়ল। প্রথা অনুযায়ী স্নানযাত্রার দিন থেকে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার জ্বর হয়েছিল। ওই দিন থেকে মন্দির বন্ধ করে তাঁদের সেবা হয়। ১৫ দিন বন্ধ থাকার পরে শুক্রবার ফের মন্দির খুলল। জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী জানান, এ দিন বিশেষ হোম হয়। তিন বিগ্রহের চক্ষুদান, প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। রাজা হিসেবে অভিষেক হয় জগন্নাথের। অলঙ্কারে সেজে উঠেছেন জগন্নাথ। এখন অপেক্ষা রথে চেপে সখী পৌর্ণমসীর বাড়ি যাওয়ার।