তুরস্কে শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতলেন চন্দননগরের তনুজ মুখোপাধ্যায়। এই প্রতিযোগিতা চলছে তুরস্কের সুমসান শহরে। ডাবলসে ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। তাঁর সাফল্যে খুশি চন্দননগরের ক্রীড়া মহলও।
তনুজের বাড়ি চন্দননগরের পুরশ্রী এলাকায়। বাড়ির লোকেরা জানান, ছোট থেকেই তিনি মূক-বধির। চিকিৎসা করানোর পরে বাকশক্তি এলেও শ্রবণশক্তি সেই তিমিরেই রয়ে যায়। কানে যন্ত্র লাগিয়ে তিনি খুব সামান্যই শুনতে পান। ছোটবেলাতেই তিনি টেবল টেনিসে ভর্তি হন। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করেছেন। এ বছর বিএ তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন।
স্কুল-কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টেবল টেনিস প্রতিযোগিতায় খেলেছেন তনুজ। বর্তমানে তিনি চন্দননগরে দেশবন্ধু স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেন। প্রশিক্ষণ চলে কোচ অম্বরিশ চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে। চন্দননগর জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জাতীয় পর্যায়েও খেলেছেন। সুযোগ পেয়েছেন পান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় দলেও। এক কথায় বলতে গেলে তিনি রাজ্য এবং জাতীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পদকও জিতেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এটাই তাঁর প্রথম পদক জেতা। তুরস্কে শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের টেবল টেনিসের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছে গত ১৮ জুলাই থেকে। আজ, রবিবার শেষ দিন। দেশের হয়ে খেলতে তনুজ-সহ তিন জন ওই দেশে পাড়ি দেন ১১ জুন। কর্নাটকের উল্লাস নায়েকের সঙ্গে জুড়ি বেঁধে শুক্রবার ডাবলসে ব্রোঞ্জ পদক জেতেন তনুজ। তবে, মিক্সড ডাবলসে কোয়ার্টার ফাইনালেই তাঁকে থেমে যেতে হয়। বাবা তপন মুখোপাধ্যায় ঠিকাদারির কাজ করতেন। এখন হৃদরোগে ভুগছেন। অসুস্থতার কারণে এখন তেমন কাজ করতে পারেন না। তপনবাবু বলেন, ‘‘ছেলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হিসেবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নেমে সাফল্য এনেছে। তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এটাই প্রথম পদক। আমরা কতটা খুশি বলে বোঝাতে পারব না।’’
দেশবন্ধু স্পোর্টিং ক্লাবের টেবল টেনিস সম্পাদক বামাপদ চট্টোপাধ্যায় চন্দননগর টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনেরও সম্পাদক। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তনুজকে ছোট থেকেই দেখছি। ওর পদক পাওয়াটা গর্বের।’’