প্রতীকী ছবি।
সাত মাস আগে কেন্দ্রীয় সরকার বই কেনার জন্য টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরের কাছে। সেই বই রাজ্যের প্রতিটি গ্রন্থাগারে এত দিনে পৌঁছে যাওয়ার কথা গত এপ্রিল-মে মাসে। অথচ এখনও কোনও গ্রন্থাগারই নতুন বই পায়নি বলে অভিযোগ।
রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের গ্রন্থাগারের জন্য গত মার্চ মাসে প্রায় চার কোটি টাকা পাঠিয়ে দিলেও নতুন বই কেনা সম্ভব হয়নি।
কেন এত দেরি?
রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর, প্রতি বছর কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতরের অধীন কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরি মারফত মার্চ মাসের মধ্যে রাজ্যের গ্রন্থাগারের জন্য টাকা দেওয়া হয়। আগে রাজ্য পর্যায়ে প্রতি বছর বই নির্বাচন কমিটি গড়া হত। সেই কমিটি ওই বছর প্রকাশিত বইয়ের তালিকা থেকে বই নির্বাচন করত। তালিকা ধরে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর বই কিনে তা কলকাতা-সহ জেলার সব গ্রন্থাগারে পাঠিয়ে দিত। ফলে মে মাসের মধ্যে সব গ্রন্থাগার বই পেয়ে যেত। একেকটি গ্রন্থাগার গড়ে ১০ হাজার টাকার বই পেত।
চলতি বছর থেকে সেই নিয়ম বদলে দেওয়া হয়। রাজ্য পর্যায়ের বই নির্বাচন কমিটির বদলে গড়া হয় প্রতিটি জেলায় একটি করে বই নির্বাচন কমিটি। তাদেরই বই নির্বাচন করে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরে পাঠানোর কথা।
রাজ্য গ্রন্থাগার বিভাগ সূত্রে খবর, আগে বই নির্বাচন করার ক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক সাহিত্য এবং সংস্কৃতির উপরে জোর দেওয়া হতো। কিন্তু নতুন গড়া জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলিকে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট জেলার সাহিত্যিক, জেলার ইতিহাস এবং সংস্কৃতির উপরে লেখা বই সুপারিশ করতে। শুধু তাই নয়, পাঠ্যপুস্তকের নাম সুপারিশ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে গ্রন্থাগারে পাঠ্য পুস্তক পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। সেই কারণেই এমন নিদান।’’
কিন্তু সমস্যা সেখানেও।
রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর, ২০টি জেলা নির্বাচন কমিটি বইয়ের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোনও কোনও জেলার তালিকা নিয়ে রাজ্য গ্রন্থাগার বিভাগের কর্তারা একমত হননি। ফের নতুন করে ওই জেলা কমিটিগুলিকে তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত পাঁচটি জেলার সুপারিশ রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর অনুমোদন করেছে। বাকি ১৫টি জেলার সুপারিশ অনুমোদিত হয়নি। সব জেলার সুপারিশ অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত প্রকাশকদের বরাত দেওয়া হবে না বলে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হয়, নভেম্বরের আগে বইয়ের বরাত দেওয়া সম্ভব হবে না।’’ তবে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরে এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘বই নির্বাচন শেষ। এখন শুধু সইয়ের অপেক্ষা।’’