কাজ থমকে শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাসে

কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুর শহরে ইএসআই হাসপাতাল‌ের কাছেই জিটি রোডের ধারে ওই বাস টার্মিনাসের কাজ শুরু হয়েছিল। হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের ওই টার্মিনাস তৈরির দায়িত্ব নিয়েছিল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০৩:১০
Share:

জট: অর্ধেক কাজ হয়ে পড়ে বাড়ির কঙ্কাল পড়ে রয়েছে মেশিন।

পেটানো হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে ভিন্‌ রাজ্যের নির্মাণকারী সংস্থা। ফল বন্ধ হয়ে গিয়েছে হুগলির শ্রীরামপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস প্রকল্পটির কাজ।

Advertisement

কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুর শহরে ইএসআই হাসপাতাল‌ের কাছেই জিটি রোডের ধারে ওই বাস টার্মিনাসের কাজ শুরু হয়েছিল। হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের ওই টার্মিনাস তৈরির দায়িত্ব নিয়েছিল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। বাস টার্মিনাসটি তৈরির জন্য শ্রীরামপুর পুরসভা থেকে ৯৮ কাঠা জমি এইচআরবিসিকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। এমবিএল ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নামে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা কাজের বরাত পেয়েছিল।

শুধু ঝাঁ-চকচকে বাস টার্মিনাস নয়, ওই প্রকল্প ঘিরে বাণিজ্যিক পরিকল্পনাও হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, বেসমেন্ট থেকে শুরু করে ছ’টি তল থাকবে টার্মিনাস ভবনে। বেসমেন্টে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেবে পুরসভা। একতলায় হবে বাস টার্মিনাস। বাস কর্মীদের জন্য ঘর থাকবে। দোতলায় যাত্রীদের লাউঞ্জ হবে। কফির স্টল বা জনতা ক্যান্টিন বাদ যাবে না কিছুই। গত বছরের শেষ দিকে নির্মাণকারী সংস্থার সংস্থার তরফে আনন্দবাজারের কাছে দাবি করা হয়েছিল, প্রকল্পের ‘ফিনিশিং টাচ’ চলছে।

Advertisement

ইমারতি দ্রব্যও। —নিজস্ব চিত্র।

কিন্তু বাস্তব হল তার ঠিক উল্টো। প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্তুপাকার হয়ে পড়ে রয়েছে বালি, পাথর-সহ বিভিন্ন ইমারতি দ্রব্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধের শর্ত না মানায় আদালত তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়। এর পর থেকেই সংস্থাটি বেপাত্তা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে বৈদ্যবাটি পুরসভার কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল সুবীর ওরফে ভাই ঘোষ ওই প্রকল্পটি দেখভাল করেন। তিনিই নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। ঠিকাদার সংস্থাকে দোষারোপ করে তাঁর দাবি, ‘‘মূল কাজ শেষ। শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। তার জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে।’’

প্রশাসনিক কর্তারা দাবি করেছিলেন, ওই বাস টার্মিনাসটি চালু হলে শ্রীরামপুর শহরে যানজট সমস্যার সমাধান হবে। জিটি রোড ছাড়া শহরের অন্যত্র বাস ঢুকবে না। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়াই সেই সব পরিকল্পনা এখন বিশ বাঁও জলে। এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নির্মাণকারী সংস্থাটি লিকুইডেশনে চলে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। বাস টার্মিনাসের বাকি কাজ শেষ করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন