শিক্ষক নেই, ৯-এ ঠেকেছে পড়ুয়ার সংখ্যা

ছিল ১৯। কমে হয়েছে ৯। এই সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে নিয়েই চলছে ইংরেজি মাধ্যমের একাদশ-দ্বাদশ বিভাগ। এই ছবি পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁচলা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছিল ১৯। কমে হয়েছে ৯। এই সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে নিয়েই চলছে ইংরেজি মাধ্যমের একাদশ-দ্বাদশ বিভাগ। এই ছবি পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরে।

Advertisement

রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ইংরেজিতে পঠনপাঠন চালু করতে উদ্যোগী হয় সংশ্লিষ্ট দফতর। ইচ্ছুক স্কুলগুলিকে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়। সেই মতো গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির তাদের বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও পঠন-পাঠন চালু করতে চেয়ে শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন জানায়। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় একাধিক স্কুল আবেদন জানালেও একমাত্র এই প্রতিষ্ঠানকে ইংরেজি মাধ্যমের পঠনপাঠন চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে শর্ত ছিল, এই বিভাগ চালানোর জন্য পৃথক পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ ৫০ জন করে ছাত্রছাত্রী বসতে পারে এমন শ্রেণিকক্ষ তৈরি করতে হবে। পৃথক শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, অঙ্ক এবং জীবনবিজ্ঞান এই চারটি বিষয় ইংরেজিতে পড়ানোর জন্য শিক্ষক চেয়ে তাঁরা স্কুল সার্ভিস কমিশনে আবেদন জানান। দু’টি পৃথক শ্রেণিকক্ষও তৈরি করা হয়।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। সেখানে উল্লেখ ছিল, ৭৫ শতাংশ বা তার উপরে মাধ্যমিকে নম্বর পেয়েছে এমন ছাত্রছাত্রীদের নেওয়া হবে। সেভাবেই ১৯ জনকে ভর্তি করানো হয়। এই বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যের হার বেশ ভাল। স্টার বা প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয় সবাই। কিন্তু সেই সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে ৫ জন। অন্য দিকে একাদশ শ্রেণীতে পড়ছে মাত্র ৪ জন।

কেন? স্কুল সূত্রে খবর, বছরের পর বছর শিক্ষক না আসায় এই অবস্থা হয়েছে। গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা তথা শিক্ষাবিদ সন্তোষ দাস বলেন, ‘‘মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আমরা ধরে বেঁধে এখানে আনি। কারণ, বিভাগটি উঠে যাক আমরা চাইনি। তাদের এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও আমরা করেছি। কিন্তু শিক্ষক দেওয়া না হলে ছাত্রছাত্রী বাড়ানো যাবে না।’’ শুধু তাই নয়, এখানে আছে গঙ্গাধরপুর শিক্ষনমন্দির নামে বিএড পড়ানোর প্রতিষ্ঠান আছে। এখানে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে আসেন তাঁদেরও দিয়ে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয় বলে স্কুল সূত্রে খবর।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শঙ্কর খাঁড়া বলেন, ‘‘কম ছাত্রছাত্রী হলেও আমরা তাদের ইংরেজি মাধ্যমেই পড়াই। বাংলা মাধ্যমের জন্য যে শিক্ষক আছেন তাঁদের দিয়েই ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের পড়ানো হয়। তাদের আলাদা করে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রি করানো হয়।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষক চেয়ে প্রতি বছরই নতুন করে আবেদন করা হচ্ছে। শিক্ষক পেয়ে গেলে বিভাগটি ভাল চালানো যায়।

কেন দেওয়া যাচ্ছে না শিক্ষক? জেলা স্কুল পরিদর্শক দফতরের এক কর্তা জানান, যাঁদের নির্বাচন করা হয় তাঁরা শহরের স্কুলে চলে যান। গ্রামে আসতে চান না। তিনি বলেন, ‘‘ ২০১৩ সালে দু’জন শিক্ষককে ওই স্কুলের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা যোগ দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন