ভাণ্ডার: শিঞ্জিনীর জমানো এই টাকাই যাচ্ছে কেরলে। নিজস্ব চিত্র
পুজো আসছে, শিঞ্জিনীর ‘ডোরেমন’ও ক্রমশ ভারী হয়ে উঠেছে। দাদু, বাবা, পিসিদের দেওয়া ছোট ছোট সঞ্চয় সেই ভাঁড়ারে জমে কত হয়েছে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জানত না সাত বছরের খুদেটি।
সকালে বাবা যখন টিনের কৌটো খুললেন ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকার কয়েন, ১০০ টাকার নোটে প্রায় ৫০০০ টাকা বেরিয়েছে। সবটাই কেরলের জন্য দিয়ে এসেছে চুঁচুড়ার তালডাঙার বাসিন্দা শিঞ্জিনী সেন।
সেই কবে থেকে মা তাকে বলেছিলেন টাকা জমিয়ে রাখতে। পুজোর সময় খরচ করবে— ফুচকা, চুলের ক্লিপ আরও কত কী কেনার ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল বিপদ। বৃষ্টির দাপটে ভেসে গেল কেরল। রাজ্যটা ঠিক কোথায় এখনও বুঝে উঠতে পারেনি শিঞ্জিনী। নাম শুনেছে। আর টিভি খুলে দেখেছে জলের স্রোত।
হেলিকপ্টারের দিকে তাকিয়ে থাকা কতগুলো খুদে মুখও চোখে পড়েছে তার। ওরা কী চায়? মা তাকে বুঝিয়েছে বিপদটা ঠিক কেমন— সব ছিল ওই শিশুদের। হঠাৎ জলের তোড়ে ভেসে গেল সব। জামা নেই, খাবার নেই, নেই ঘুমোনোর বিছানা। শুধু তাকিয়ে থাকা যদি হেলিকপ্টার নিয়ে যায় তুলে, নিরাপদে। অথবা দিয়ে যায় দু’টো বিস্কুট।
শিঞ্জিনী বলেছে, ‘‘আমাকে তো বাবা, দাদু জামা কিনে দেবে পুজোয়। পাঁচটা তো হবেই। ওদের নেই। আমার টাকা দিয়ে ওদের জামা কিনে দেবে।’’ রবিবারই তাদের পাড়ায় সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন বাম শিবিরের নেতারা। তা দেখে শিঞ্জিনী বুঝেছিল, ওই কৌটোতেই টাকা দিতে হয়। মঙ্গলবার বাবার সঙ্গে গিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে এসেছে সে।