আরামবাগ হাসপাতালে জখমেরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
আলু চাষে বিমার টাকাকে কেন্দ্র করে গোলমালে জখম হলেন আরামবাগের হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ তিন তৃণমূল নেতা। শুক্রবার রাত ৭টা নাগাদ কাবলে মোড় এলাকায় ওই ঘটনায় পুলিশ গিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় স্থানীয় সমবায় সমিতির সম্পাদক রণজিৎ ঘোষ এবং আর এক তৃণমূল নেতা কৃপাময় সামন্তকে উদ্ধার করে।
প্রধান আব্দুল আজিজ খান ওরফে লাল্টু ওই টাকার ভাগ চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন রণজিৎ। তার জেরেই প্রধানের দলবলের সঙ্গে রণজিৎ এবং কৃপাময়ের লোকজন গোলমালে জড়ান। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে।
রণজিৎ বলেন, ‘‘কোনও প্ররোচনা ছাড়াই প্রধানের লোকজন আমাদের রাস্তায় ফেলে মারধর করে। তারপর দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়েও লাঠি, রড দিয়ে মারা হয়। চাষিদের বিমার টাকা থেকে অন্তত ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে প্রধান দাবি করেছিলেন। রাজি হইনি।’’ অভিযোগ, সেই ক্ষোভ থেকেই তাঁদের মারধর করা হয়েছে।
যদিও প্রধানের দাবি, “দিন পনেরো আগে চাষিদের সঙ্গে যাবতীয় লেনদেনের হিসাব চেয়েছিলাম। অভিযোগ ছিল সারের প্যাকেট পিছু ৩০-৩৫ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। অনেক চাষির অ্যাকাউন্টেই বিমার টাকা ঢোকেনি। এ সব দুর্নীতি চাপা দিতেই গোলমাল পাকানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ওই সন্ধ্যায় তিনি মোটরবাইকে মায়াপুরে দলীয় কার্য়ালয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাঁকে মারধর করেন কৃপাময় ও রণজিৎ। লাল্টু বলেন, ‘‘কাবলে মোড়ে মোটরবাইকে ধাক্কা মেরে আমাকে রাস্তায় ফেলে গাড়ি চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টা করেছিল। আমার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ করেছেন।’’ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট কাবলে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে আলু চাষে ক্ষয়ক্ষতিতে চাষিদের বিমার শর্ত অনুযায়ী প্রায় ৩৩ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণের প্রায় সাড়ে ৫৩ লক্ষ টাকা গত ১ নভেম্বর সমবায়ে আসে। সেই টাকাকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কায় সে দিনই প্রায় ৪৩০ জন চাষির অ্যাকাউন্টে তাঁদের পাওনা দেওয়া হয়। সমস্ত বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী অসীমা পাত্র বলেন, “প্রশাসনকে দেখতে বলা হয়েছে। কেউ অন্যায় করলে দল বরদাস্ত করবে না।’’