জাল দলিল তৈরি করে হাতবদল

জমি জালিয়াতি চক্রের তিন পান্ডা গ্রেফতার

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কানাইপুরে শম্ভু ঘোষ নামে এক বৃদ্ধের কাঠা চারেক জমি রয়েছে। দিন কয়েক আগে জনৈক সঞ্জিৎ শেষ এবং তাঁর ছেলে জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরতে শুরু করেন। তখনই শম্ভুবাবুর পরিবারের লোকজনের টনক নড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

জমির মালিকের নাম-ঠিকানা একই রয়েছে। শুধু বদলে গিয়েছে ছবি। আর এভাবেই ‘বেহাত’ হয়ে যাচ্ছে নিজের জমি।

Advertisement

হুগলিতে ফের সামনে এল জমি জালিয়াতি চক্রের কারবার। এ বার শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর। চক্রে জড়িত অভিযোগে শুক্রবার রাতে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। ধৃত অরুণ সিংহ ওরফে আপ্পু, পীযূষ মজুমদার এবং পরিতোষ ওঝা ওরফে বাসু ওই এলাকারই বাসিন্দা। শনিবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা দোষ স্বীকার করেছে। চক্রে আর কারা রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কানাইপুরে শম্ভু ঘোষ নামে এক বৃদ্ধের কাঠা চারেক জমি রয়েছে। দিন কয়েক আগে জনৈক সঞ্জিৎ শেষ এবং তাঁর ছেলে জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরতে শুরু করেন। তখনই শম্ভুবাবুর পরিবারের লোকজনের টনক নড়ে। তাঁদের অভিযোগ, জমি তাঁদের। তার বৈধ দলিলও তাঁদের হাতে রয়েছে। অথচ জাল নথি তৈরি করে জমি বিক্রি করে দিয়েছে জমির দালালরা। শম্ভুবাবু উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ।

Advertisement

অভিযোগ, জমির কারবারিরা ঠাকুর নামে এক ব্যক্তিকে শম্ভু ঘোষ সাজিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে নিয়ে যায়। চক্রের লোকেরাই তাকে ওই নামে সনাক্ত করে। এর পরে ওই জমি কাঠা প্রতি সাড়ে ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় রেলকর্মী সঞ্জিৎবাবুকে। আসল মালিকের অগোচরেই কয়েক লক্ষ টাকার লেনদেন হয়ে যায়। সঞ্জিৎবাবু পুলিশকে জানান, আপ্পু তাঁর পরিচিত। তার উপর ভরসা করেই বাড়ি তৈরির জন্য ঋণ নিয়ে তিনি ওই জমি কেনেন।

ভুয়ো মালিক সাজিয়ে জমি বেহাত হওয়ার ঘটনা হুগলিতে নতুন নয়। আগেও ডানকুনি, চণ্ডীতলা, শ্রীরামপুরে দিল্লি রোডের ধারের বহু জমি একই কায়দায় বেহাত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্রেতা জমি ঘেরার সময় বা ওই জমির কাজে ভূমি দফতরে গেলে তবেই আসল মালিক বিষয়টি জানতে পারেন। সরকারি দফতরের এক শ্রেণির কর্মীর যোগসাজসে এই কাজ হয় বলে অভিযোগ। কয়েক মাস আগে ডানকুনিতে একই পদ্ধতিতে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুর মহকুমায় জাল দলিল করে জমি হাত বদলের অভিযোগে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন