দোষী: আদালতে রায় ঘোষণার পর। নিজস্ব চিত্র
পারিবারিক পুকুর বিক্রির এক লক্ষ টাকা না-দেওয়ায় বছর ছয়েক আগে খুন হয়েছিলেন পঞ্চানন মণ্ডল নামে বলাগড়ের এক প্রৌঢ়। সেই খুনের দায়ে তাঁর স্ত্রী, ছেলে এবং পুত্রবধূকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল আদালত।
বুধবার চুঁচুড়া আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক উৎপল মিশ্র ওই সাজা শোনান পঞ্চাননবাবুর ছেলে দীপঙ্কর, তার স্ত্রী ঝুমা এবং দীপঙ্করের মা প্রতিমাকে ওই সাজা শোনান। মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী কালীপ্রসাদ সিংহরায় জানান, বিচারক ওই তিন জনকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। এ দিন সাজা ঘোষণা করলেন। যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ছাড়াও এ দিন তিন জনকে ৫০০০ টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক। অনাদায়ে আরও তিন বছরের জেল-হাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, পঞ্চাননবাবুদের বাড়ি বলাগড়ের ইনচুড়া ঝাঁপানতলা গ্রামে। বছর ছয়েক আগে, ২০১১ সালে পুকুর বিক্রি করে এক লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন পঞ্চাননবাবু। দীপঙ্কর সেই টাকা দাবি করে। পঞ্চাননবাবু রাজি হননি। এ নিয়ে পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে খাওয়ার পরে বছর পঞ্চান্নর পঞ্চাননবাবু ঘুমিয়ে পড়লে দীপঙ্কর একটি বড় চপার দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে খুন করে। এর পরে মা ও স্ত্রীর সাহায্যে বাবার দেহটি একটি বস্তায় ভরে নিজের মোটরবাইকে চাপিয়ে রাত ১টা নাগাদ বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তেহরনই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের খালে ফেলে দেয়। স্থানীয় এক যুবক তা দেখে ফেললে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরের দিন সকালে স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বস্তাবন্দি দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়।
ওই তিন জনের বিরুদ্ধে পঞ্চাননবাবুকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর ভাইপো বিকাশ মণ্ডল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দীপঙ্কর, ঝুমা এবং প্রতিমাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ খুনে ব্যবহৃত চপার, দীপঙ্করের রক্তমাখা জামাকাপড় এবং যে মোটরবাইকে চাপিয়ে মৃতদেহ ফেলে আসা হয়েছিল, সেটি বাজেয়াপ্ত করে। খুন ছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধির আরও দু’টি ধারায় মামলা রুজু হয়। কয়েক মাস হাজতবাসের পরে তিন জন জামিন পায়।