দুই জেলায় ভোটাভুটি এড়াতে পারল না শাসক

প্রশাসন সূত্রের খবর, তারকেশ্বর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে এ দিন ছ’টিতে বোর্ড গঠন করা হয়। সন্তোষপুর পঞ্চায়েতে প্রধান পদে ভোটাভুটি হয়নি। কিন্তু উপপ্রধান পদে দলের ঠিক করা অশোক ঘোষের বিপক্ষে দাঁড়ান বিশ্বনাথ সরখেল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত। তবু ভোটাভুটি এড়াতে পারল না তৃণমূল। বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরের চারটি পঞ্চায়েতেই সেই ছবি দেখা গেল। চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের দিকসুই-হোয়েরা পঞ্চায়েতেও শাসক দলের দু’পক্ষের মধ্যে ভোটাভুটি হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, তারকেশ্বর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে এ দিন ছ’টিতে বোর্ড গঠন করা হয়। সন্তোষপুর পঞ্চায়েতে প্রধান পদে ভোটাভুটি হয়নি। কিন্তু উপপ্রধান পদে দলের ঠিক করা অশোক ঘোষের বিপক্ষে দাঁড়ান বিশ্বনাথ সরখেল। দলীয় পদপ্রার্থীকে হারিয়ে বিশ্বনাথবাবুই ভোটে জিতে উপপ্রধান হন। নাইটা-মালপাহারপুর পঞ্চায়েতে দলের ঠিক করা পদপ্রার্থী প্রতিমা মাঝিকে হারিয়ে প্রধান হন অরুণা মাঝি। রামনগর পঞ্চায়েতে প্রধান এবং উপপ্রধান দু’টি পদ নিয়েই ভোটাভুটি হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই দলের ঠিক করা প্রার্থী হেরে গিয়েছেন। প্রধান হয়েছেন রুমা বিশ্বাস। উপপ্রধান নির্বাচিত হন আশিস সামন্ত।

ভঞ্জিপুর পঞ্চায়েতে দলের তরফে বুল্টি মাল (ঘোড়ুই)-কে প্রধান পদে এবং অশোক আসকে উপপ্রধান পদে ঠিক করা হয়েছিল। ভোটাভুটিতে দু’জনেই জিতে গিয়েছেন দলের অপর গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি পঞ্চায়েতের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অসীমা পাত্র সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘কোথাও ভোটাভুটি হয়েছে বলে খবর পাইনি। এমনটা হলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে এ দিন সকাল থেকেই তেতে ছিল দিকসুই-হোয়েরা পঞ্চায়েত। প্রধান পদ নিয়ে যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে এক দিকে ছিলেন এলাকার বর্ষীয়ান নেতা মানসকুমার ঘোষ। অন্য দিকে বাঁশবেড়িয়া শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবরাজ পালের অনুগামীরা। ভোটাভুটিতে জিতে দেবরাজ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রদীপ রায় প্রধান এবং বীরেন্দ্র খাড়া উপপ্রধান হন‌।

মানসবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমাদের পক্ষে থাকা সদস্যদের ভয় দেখিয়েছে ওরা। তাই এমন ফল হল।’’ আবার দেবরাজের বক্তব্য, ‘‘সদস্যরা গোষ্ঠীবাজি পছন্দ করেন না। ওঁরা উন্নয়ন চান। তাই তাঁরা নিজেদের পছন্দমতো প্রধান এবং উপপ্রধান ঠিক করেছেন।’’ বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কায় মগরা, বলাগড়, পান্ডুয়া থানার পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছি‌ল ডিএসপি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে।

একই ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়া জেলায়ও। গোষ্ঠী সংঘর্ষে জেরবার সাঁকরাইলের ধুলাগড়িতে ক্ষমতা ধরে রাখল তৃণমূল। এ বারের এই পঞ্চায়েতের ১৯টি আসনের মধ্যে ১১টি পেয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৮টি আসন। এ দিন প্রধান পদে ভোটাভুটি হয়। বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে প্রধান হন তৃণমূলের তাহিরা আলি লস্কর।

ধুলাগড়ি এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার রাজনৈতিক মহলের নজরে ছিল। কারণ, বছর দুই আগে এই এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তার ফায়দাও নিতে চেষ্টা করে বিজেপি। সেই কোন্দল পিছন ছাড়েনি এ দিনও। প্রধান পদে একাধিক গোষ্ঠী দাবিদার হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত নেতাদের হস্তক্ষেপে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা হয়ে যায়।

ধুলাগড়ির সঙ্গে এ দিন জেলার ৩৮টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন ছিল। সব ক’টি পেয়েছে তৃণমূ‌ল। জগৎবল্লভপুরের শঙ্করহাটি ২ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। প্রধান পদে দুটি গোষ্ঠীর দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটাভুটি হয়। জেলার বাকি ৩৭টি পঞ্চায়েতে শান্তিপূর্ণভাবে বোর্ড গঠন হয়েছে। সর্বত্র কড়া পুলিশ পাহারা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন