— ফাইল চিত্র।
ফেরিঘাট চালানোর জন্য টেন্ডার হয়নি ২০১১ সাল থেকে। অভিযোগ, ওই বছরে ক্ষমতায় এসে খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতির হুড়হুড়া খালের উপর মুচিঘাটা ফেরিঘাট দখল করেছিল তৃণমূল। সেই থেকে প্রতি মাসে ওই সেতু পারাপার বাবদ লক্ষাধিক টাকা এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
খানাকুল-২-এর বিডিও দেবল উপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির ওই ফেরিঘাটটি দীর্ঘদিন বেদখল। রাজস্বও মেলে না। নতুন করে টেন্ডারও করা যাচ্ছে না।’’
খানাকুলের নতিবপুর থেকে মুচিঘাটা এবং মুচিঘাটা থেকে ঝিকিরা রাস্তার সংযোগস্থলে রয়েছে মুচিঘাটার হুড়হুড়া খাল। ফেরিঘাটটির ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ইজারাদার হিসাবে ছিল স্থানীয় বলপাই দৌলতচক সাধারণ পাঠাগার। একটি কাঠের সেতু তৈরি করে ইজারা বাবদ পাঠাগারটি প্রথম তিন বছর ৩৮ হাজার টাকা এবং পরের চার বছর ৩৯ হাজার টাকা করে পঞ্চায়েত সমিতিতে জমা দিয়েছিল। সেই শেষ। ২০১১ সালে সেই সেতু-সহ ঘাট দখল হয়ে যায় বলে অভিযোগ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ফেরিঘাট বেদখল হওয়ার পর পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ফেরিঘাটের বাৎসরিক লিজ নবীকরণ বা হস্তান্তরের জন্য ২০১১ সালের ১১ জুলাই প্রথমবার সর্বদলীয় আলোচনা সভা ডাকা হয়েছিল। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতারাদের একাংশের বাধায় সেই সভা হয়নি। তারপর আরও কয়েকবার সভা ডাকলেও একই বাধা আসে। ব্লক প্রশাসনের অভিযোগ, এমনিতেই খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল মজবুত নয়। ফেরিঘাটটি বেদখল থাকায় কম করে ১২ লক্ষ টাকার রাজস্ব লোকসান হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘাটের উত্তর-পশ্চিম দিক তদারকি চলছে পলাশপাই-২ অঞ্চল নেতা ও ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশিক আলি মল্লিকের নেতৃত্বে। দক্ষিণ-পূর্ব দিক তদারকি করছেন পলাশপাই-১ অঞ্চলের নেতা অরিন্দম শী। ওই ঘাট থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা পারাপার বাবদ টাকা ওঠে। মানুষ পিছু ১ টাকা, সাইকেল-সহ মানুষ ২ টাকা, মোটরবাইক ৫ টাকা, ছোট গাড়ি ১৫ টাকা এবং ছোট লরি ২৫ টাকা।
অরিন্দম শীর কথায়, ‘‘২৭টা পরিবারের লোককে পালা করে পারাপারের পয়সা তোলার কাজ দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে ২০ জন প্রতিবন্ধী। এছাড়া প্রায় ৫০ জন দুঃস্থ পরিবারকে সাহায্যও করা হয়েছে।’’ আশিক আলি মল্লিকও ফেরিঘাটের আয় থেকে নানা সমাজসেবামূলক কাজের খতিয়ান দিয়েছেন। তবে কত টাকা কোন খাতে খরচ হয়েছে, হিসেবে দিতে পারেননি কেউই। সরকারি টাকায় ‘জনহিত’-এর নির্দেশ কে দিয়েছেন— উত্তর মেলেনি।
বিধায়ক ইকবাল আহমেদের বক্তব্য, ‘‘ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’