হুগলির শ্রীরামপুর আদালতের বার লাইব্রেরির ভোটে সভাপতি পদে হারলেন শাসকদলের প্রার্থী মোহনলাল নাড়ু। শুক্রবারের ওই ভোটে তিনি অরাজনৈতিক মঞ্চের প্রার্থী গণরঞ্জন চক্রবর্তীর কাছে হারেন। গণরঞ্জনবাবু ১৩৪টি ভোট পান। মোহনলালবাবুর প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৫৫।
মোহনলালবাবু তৃণমূলের আইনজীবী সেলের শ্রীরামপুরের সভাপতি তথা ওই আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী। তাঁর একতরফা সিদ্ধান্তেই তৃণমূল পর্যুদস্ত হয়েছে বলে দলের আইনজীবী সেলের নেতাদের একাংশের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ৯টি আসনের প্রত্যেকটিতেই তৃণমূলের তরফে প্রার্থী দাঁড় করানোর জন্য মোহনলালবাবুকে লিখিত নির্দেশ দেন দলের লিগাল সেলের হুগলি জেলা সভাপতি রঘুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তা সত্ত্বেও মোহনলালবাবু দলের কোনও প্রার্থী দাঁড় করাননি। শুধুমাত্র তিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বাকি আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আইনজীবীরা জেতেন।
অভিযোগ অবশ্য মানেননি মোহনলালবাবু। তাঁর দাবি, ন’টি আসনের প্রত্যেকটিতে প্রার্থী দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দলেরই একটা বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী সিপিএম-বিজেপির হয়ে প্রচার করেছে। ওরা নোংরামো করেছে। দলের নির্দেশ অমান্য করে দলীয় প্রার্থীকে হারানোর বন্দোবস্ত করে কারও নিজেকে তৃণমূল বলে দাবি করা উচিত নয়। ওরাই দলের মুখ পুড়িয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’’
এই ঘটনায় দলের অন্দরেও জলঘোলা শুরু হয়েছে।
আদালতের সরকারি আইনজীবী তথা তৃণমূল নেতা জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা মনোনয়ন তুলেছিলাম। কিন্তু মোহনলালবাবু সম্মতি না-দেওয়ায় তা জমা দিতে পারিনি। উনি সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন।’’
গোটা ঘটনা নিয়ে জয়দীপবাবু দলের হুগলি জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে শ্রীরামপুরের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।
সরকারি আইনজীবী দীপ্তব্রত বটব্যাল বলেন, ‘‘পদের সুযোগ নিয়ে মোহনলালবাবু দলের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’’