বন্‌ধে নামেনি বাস, ‘শাস্তি’

আন্দুল স্টেশন রোড বাসস্ট্যান্ড থেকে নিউটাউন রুটের ২০টি বাস ছাড়ে। এ দিন সকালে কিছু বাস ছাড়লেও বেলা ১০টার সময় একদল লোক তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে এসে পুলিশের সামনেই সমস্ত বাসের চালক-কন্ডাক্টরদের নামিয়ে চাকার হাওয়া খুলে দেয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া ও হাওড়া শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০৭
Share:

পোস্টারে এক সপ্তাহ বাস বন্ধ থাকা উল্লেখ। নিজস্ব চিত্র

বিজেপির ডাকা বন্‌ধে গোলমালের আশঙ্কায় হাওড়ার দু’টি স্ট্যান্ডের বাস পথে নামেনি। এই ‘অপরাধে’ বৃহস্পতিবার দুই স্ট্যান্ডের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। বাস না-পেয়ে এ দিনও দুর্ভোগে সাধারণ যাত্রীরা। শাসকদল অভিযোগ মানেনি। হুগলিতেও কয়েকটি রুটে বাস কম চলেছে।

Advertisement

আন্দুল স্টেশন রোড বাসস্ট্যান্ড থেকে নিউটাউন রুটের ২০টি বাস ছাড়ে। এ দিন সকালে কিছু বাস ছাড়লেও বেলা ১০টার সময় একদল লোক তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে এসে পুলিশের সামনেই সমস্ত বাসের চালক-কন্ডাক্টরদের নামিয়ে চাকার হাওয়া খুলে দেয় বলে অভিযোগ। বাস চালক রাজু রায় বলেন, ‘‘এলাকার তৃণমূল নেতারা এসে রুট তুলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁদের নির্দেশেই চাকার হাওয়া খোলা হয়।’’

অভিযোগ মানেননি তৃণমূল বিধায়ক শীতল সর্দার। তাঁর দাবি, ‘কারা বাস বন্ধ করেছে জানি না। আমাদের কেউ এমন করবে বলে মনে হয় না।’’ হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার সময় কোনও পুলিশ ভ্যান ছিল না। উত্তেজনা ছড়ানোর পর পুলিশ যায়। কিন্তু তার আগেই চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

Advertisement

আমতা বাসস্ট্যান্ড থেকেও বুধবার কোনও বাস চলেনি। বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাসস্ট্যান্ডে বাস নিয়ে যেতে গিয়ে চালকেরা দেখেন, জায়গাটি দড়ি দিয়ে ঘেরা। ঝুলছে তৃণমূলের পতাকা। একাধিক জায়গায় ‘উলুবেড়িয়া উত্তর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি’র নামে সাঁটানো পোস্টারে লেখা, ‘বুধবার ইচ্ছাকৃত ভাবে রুটে বাস না-চালানোর প্রতিবাদে এই সমস্ত রুটের বাস এক সপ্তাহ বন্ধ থাকিবে। যাত্রীসাধারণের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত’।

ওই স্ট্যান্ড থেকে ১৬টি রুটের বাস ছাড়ে। কিন্তু এ দিন বাস না-চলায় কয়েক হাজার যাত্রী বিপাকে পড়েন। কালীপদ মণ্ডল নামে এক বাস-চালক বলেন, ‘‘শাসকদলের পোস্টারে আমরা ভয় পেয়ে আর বাস চালাইনি।’’ অভিযোগ মানতে চাননি উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি বিশ্বনাথ লাহা। তাঁর দাবি, ‘‘বাস-মালিকেরা ইচ্ছা করে বুধবার বাস চালাননি। কিন্তু বৃহস্পতিবার আমরা বাস বন্ধ করিনি। আমাদের পতাকা নিয়ে আমাদের নাম করে অন্য কোন দল এই কাজ করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। কারা এই কাজ করল, তদন্ত হবে।’’ পুলিশ অবশ্য আজ, শুক্রবার থেকে বাস চালাতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাস-মালিকদের।

এ দিন সকালের দিকে হুগলির ৪, ১৩, ২৩, ১৭ নম্বর রুটের বাসও কম চলেছে। বন্‌ধের দিন বাস না-চালানোর ওই সব রুটের বাস-চালকেরা শাসকের রোষের আশঙ্কায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে, কোনও অশান্তি হয়নি। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের দাবি, ‘‘বাস-মালিকদের আতঙ্কের কারণই ছিল না। আমাদের কেউ কাউকে হেনস্থা করেনি। ওঁরা আমাদের সঙ্গে কথা বললেই পারতেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন