শ্রমিক-বিক্ষোভে ছ’দিন বন্ধ কারখানা খুলছে আজ

কারখানার মালিক নরেন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘‘অধিকাংশ কর্মী চুক্তি মোতাবেক বোনাস নিয়েছেন। তার বাইরে গিয়ে অল্প কয়েক জন কর্মী বহিরাগত কিছু লোকের মদতে গোলমাল করেছেন। কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পুজোর মুখে অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাওনা নিয়ে কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের জেরে ছ’দিন আগে কাজ বন্ধ হয়েছিল শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরের একটি সিল্ক প্রিন্টিং কারখানায়। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে কারখানা খুলছে। তবে, জটিলতার পিছনে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের গোষ্ঠী-কোন্দল সামনে এসেছে।

Advertisement

শ্রম দফতর এবং কারখানা সূত্রের খবর, সেখানে শ’দুয়েক কর্মী আছেন। ২০১৫ সাল থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত শ্রমিকদের পাওনাগণ্ডা নিয়ে আইএনটিটিইউসি সংগঠনের চুক্তি হয়। সম্প্রতি জনা ত্রিশ শ্রমিক বোনাস-সহ অন্য পাওনা এবং সুযোগ বাড়ানো দাবি তোলেন। মালিকপক্ষ জানান, চুক্তি অনুযায়ীই টাকা নিতে হবে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলনকারীরা কারখানার বাইরে ধর্না শুরু করেন‌। অভিযোগ, কাজে যোগ দিতে আসা শ্রমিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

বুধবার শ্রীরামপুরের উপ-শ্রম কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তীর দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ঠিক হয়, বৃহস্পতিবার থেকে কাজ চালু হবে। পার্থসারথিবাবু বলেন, ‘‘মালিকপক্ষ ফের বোনাসের হিসেব কষবেন‌। গোটা বিষয়টি নিয়ে পুজোর পরে আলোচনা হবে।’’ কারখানার মালিক নরেন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘‘অধিকাংশ কর্মী চুক্তি মোতাবেক বোনাস নিয়েছেন। তার বাইরে গিয়ে অল্প কয়েক জন কর্মী বহিরাগত কিছু লোকের মদতে গোলমাল করেছেন। কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পুজোর মুখে অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেল।’’

Advertisement

কেন এই পরিস্থিতি?

তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, আন্দোলনকারী কর্মীদের মধ্যে কয়েক জন সম্প্রতি দলের পিয়ারাপুর অঞ্চল সভাপতি সুদর্শন বরের কাছে যান। তাঁর মধ্যস্থতায় জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত কারখানার সামনে মিটিং করেন। তার পরেই ওই আন্দোলন শুরু হয়। সুদর্শনবাবু দাবি করেছেন, মালিকপক্ষই কারখানা বন্ধ করেছিলেন। বিদ্যুৎবাবু বলেন, ‘‘ন্যূনতম মজুরি থেকে ইএসআই, প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা— কিছুই কর্মীদের দেওয়া হয় না। আমাদের সন্দেহ, সঠিক হারে বোনাসও দেওয়া হয় না। আমি কারখানায় গিয়ে কাগজপত্র দেখব।’’ কারখানার আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের ভূমিকা প্রসঙ্গে সংগঠনের জেলা সভাপতির বক্তব্য, ‘‘সংগঠনের নামে কেউ ব্যবসা করলে, সমর্থন করতে পারব না। ওখানে সেটাই হয়েছে।’’

কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি তাপস দাস অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘অধিকাংশ কর্মীই হাসিমুখে কাজ করছেন। কিছু লোক অশান্তি করছেন। দুঃখের বিষয়, সংগঠনের জেলা সভাপতি এবং দলের অঞ্চল সভাপতি দাঁড়িয়ে থেকে কারখানা বন্ধ করলেন।’’

দেবীপক্ষে জটিলতা কাটায় অবশ্য হাঁফ ছেড়েছেন সকলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement