Containment Zones

হুঁশ ফিরল হাওড়ায়, হল সম্পূর্ণ লকডাউন

এ দিন কঠোর ভাবে পালিত হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ সব এলাকাতেই। কড়া পুলিশ প্রহরায় ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে বাসিন্দাদের।

Advertisement

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৫:২১
Share:

ছবি পিটিআই।

সক্রিয় প্রশাসন। তাই বদলাল ছবিটা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাজ্যে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এ‌লাকায় লকডাউন জারি হলেও গ্রামীণ হাওড়ার সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির জনজীবনে তার তেমন ছাপ পড়েনি। দেখা গিয়েছিল, লকডাউন-এর আওতায় পড়া অনেক এলাকাতেই ঘোরাঘুরি করছে লোকজন। বিধি কার্যকর করতে প্রশাসনের তেমন কোনও হেলদোলও চোখে পড়েনি। অভিযোগ উঠেছিল, প্রশাসনিক গাফিলতির। শুক্রবার অবশ্য ছবির আমূল পরিবর্তন ঘটে। প্রশাসন নড়েচড়ে বসায় লকডাউন-এর বিধি এ দিন কঠোর ভাবে পালিত হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ সব এলাকাতেই। কড়া পুলিশ প্রহরায় ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে বাসিন্দাদের।

হাওড়া জেলায় মোট ৫৬টি এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩৯টি পড়েছে গ্রামীণ হাওড়ায়। প্রতিটি গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেই ল‌কডাউন বলবৎ হয়েছে। রয়েছে পুলিশের কড়া প্রহরা। সংশ্লিষ্ট এ‌লাকাগুলির বাসিন্দাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন কোনও প্রয়োজনেই বাইরে না আসেন। বাইরে থেকে ওই এলাকাগুলিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সিল করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার রাস্তাগুলি। সমস্ত বিধিনিষেধ যাতে এলাকাবাসী মেনে চলেন, তা নজরে রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

Advertisement

আমতা ১ ব্লকের মেলাইপাড়া ও নাপিতপাড়া এলাকাকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লকডাউন-এর বিধিনিষেধ কঠোর ভাবে বলবৎ করা হয়েছে। এলাকা দু’টির প্রবেশ দ্বারে পুলিশের প্রহরা বসানো রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আমতা কলাতলা থেকে সিনেমাতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় যান চলাচল। এই রাস্তাটি শহরের ‘লাইফলাইন’। ওই রাস্তা ধরেই আসতে হয় আমতা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির দোকানগুলি ছাড়া বাকি সব দোকান এ দিন বন্ধ ছিল। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, মেলাইপাড়া এবং নাপিতপাড়ার সংলগ্ন এ‌লাকাকে ‘বাফার জ়োন’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানেও লকডাউন-এর বিধি কার্যকর করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে রাস্তার ধারের বাজারটিও। বন্ধ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড। বাস ছেড়েছে কলাতলা পেট্রোল পাম্প থেকে।

ওই রাস্তার ধারে বিডিও কার্যালয়-সহ বেশ কিছু সরকারি অফিস এবং ব্যাঙ্ক রয়েছে। তবে সেই কার্যালয়গুলিকে লকডাউন-এর আওতার বাইরে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেলাইপাড়া এবং নাপিতপাড়ার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাঠানো হচ্ছে বাইরে থেকে। সিরাজবাটি এবং আমতা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের সব প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা হচ্ছে বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক।

উল্লেখ্য, নাপিতপাড়ায় সম্প্রতি ২৯ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। উদয়নারায়ণপুরে ১১টি পঞ্চায়েত এল‌াকাকেই গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। সেখানেও লকডাউন-এর বিধি কার্যকর করা হয়েছে। বিধিনিষেধ যাতে কঠোর ভাবে মেনে চলা হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়েছে এ দিন। প্রতিটি পঞ্চায়েত এল‌াকাতে বসেছে পুলিশ প্রহরা। একই ছবি দেখা গিয়েছে জগৎবল্লভপুরে। এখানে তিনটি পঞ্চায়েতের ১০টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা এবং সংলগ্ন ‘বাফার জ়োনে’ চলছে সম্পূর্ণ লকডাউন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের খাবার-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন