নকল: অভিযানে উদ্ধার হয়েছে এই ওষুধই। নিজস্ব চিত্র
যে বাড়ি থেকে শুক্রবার প্রচুর ভেজাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেই বাড়ির মালিক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল রিষড়া থানার পুলিশ। তবে, ওই কারবারের মূল অভিযুক্ত অধরাই।
ধৃতদের নাম করুণা সাউ এবং গোবিন্দ সাউ। রিষড়ার এন এস রোডে করুণাদেবীর দোতলা বাড়ির একতলার একটি ঘরে কিছুদিন ধরে ভেজাল সিরাপ তৈরির কারবার চলছিল। শুক্রবার পুলিশ সেখানে হানা দিয়ে ওই ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ তরল, শিশি, ছিপি, লেবেল, জ্যারিকেনে ভরা তরল বাজেয়াপ্ত করে। করুণাদেবী দাবি করেন, স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দর মাধ্যমে রাকেশ নামে এক যুবক কয়েক দিন আগে ঘরটি ভাড়া নেন আলতা-সিঁদুর তৈরির কথা বলে। কিন্তু তার বদলে যে ওই ঘরে ভেজাল ওষুধ তৈরি হতো তা তাঁর জানা ছিল না। পুলিশ করুণা এবং গোবিন্দকে আটক করে। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ওষুধ প্রস্তুতকারী একটি সংস্থার অনুমোদিত এজেন্সির তরফে ওই সন্ধ্যায় রিষড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত গোবিন্দ রাকেশের সহযোগী বলে অভিযোগ। রাকেশ যাতে চোরাগোপ্তা ভাবে ভেজাল ওষুধ তৈরির কারবার চালিয়ে যেতে পারেন, সে জন্যই গোবিন্দ তাঁকে ওই বাড়িতে ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেন। আর করুণাও জেনেবুঝেই তাঁকে ভাড়া দিয়েছিলেন। শনিবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সম্প্রতি এই জেলারই ডানকুনিতে একটি ট্রাক আটকে প্রচুর পরিমাণ ভেজাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ওই ঘটনার সঙ্গে রিষড়ার ভেজাল ওষুধের কারবারের যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক কী ভাবে ওই চক্র চলছিল, কী ভাবে ভেজাল ওষুধ বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হতো— সবই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মূল অভিযুক্ত ধরা পড়লেই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে। তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
এলাকায় ওই ব্যবসার কথা জেনে স্থানীয় বাসিন্দারা তাজ্জব। অনেকেই বলছেন, পুলিশ অভিযান না-চালালে বিষয়টি হয়তো জানা যেত না। তদন্তকারীরা মনে করছেন, রাকেশ অন্য কোথাও এই ব্যবসা করত। কোনও কারণে সম্প্রতি এখানে চলে আসে। চক্রের জাল আরও বিস্তৃত।