Bank Mitra

সঙ্কটে ইউবিআই-এর ব্যাঙ্ক-মিত্রেরা

মাসে মাত্র তিন হাজার টাকা তাঁদের বেতন। কিন্তু সেই টাকা কবে হাতে আসবে, সে চিন্তায় তাঁদের ঘুম উবেছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশে গিয়েছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক। তার পর থেকে প্রায় চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না সাবেক ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’রা। শুধু হাওড়া এবং হুগলি জেলা মিলিয়ে ১২২ জন ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’ আছেন। এর মধ্যে হাওড়ার আছেন ২২ জন। বাকিরা হুগলির। সকলেরই এক অবস্থা। মাসে মাত্র তিন হাজার টাকা তাঁদের বেতন। কিন্তু সেই টাকা কবে হাতে আসবে, সে চিন্তায় তাঁদের ঘুম উবেছে।

Advertisement

প্রত্যন্ত গ্রামে কাজ করার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক যে সব কর্মী বহাল করে তাঁরাই ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’। কোনও ব্যাঙ্ক তাঁদের সরাসরি বহাল করে। কোনও ব্যাঙ্ক ঠিকা সংস্থার মাধ্যমে। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের ‘ব্যাঙ্ক মিত্রেরা’ ঠিকা সংস্থার মাধ্যমে বহাল হয়েছিলেন।

ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্ক মিত্রদের অভিযোগ, মে মাস থেকে তাঁরা ন্যূনতম বেতন পাচ্ছেন না। ঋণ আদায়ের উপরে তাঁদের সামান্য কমিশন দেওয়া হলেও লকডাউনের জন্য ঋণ আদায় প্রায় হচ্ছে না বললেই চলে। ফলে, কমিশনও অমিল। লকডাউনের সময় বহু মানুষ তাঁদের সঞ্চয় তুলেছেন। জিরো ব্যালেন্স অ্যাকাউন্টে গরিব মহিলারা তিন মাস ধরে মাসে ৫০০ টাকা করে পেয়েছেন। রাজ্য সরকার কাজ হারানো শ্রমিকদের দিয়েছে মাসে ১০০০ টাকা। এই সব কাজ করতে গিয়ে তাঁদের নাভিশ্বাস উঠেছে।

Advertisement

ব্যাঙ্ক মিত্রেরা জানান, কাজ বন্ধ করে দিলে গরিব মানুষেরা পরিষেবা পাবেন না। সেই যুক্তিতে দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কত দিন এ ভাবে কাজ করা সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি তাঁরা এসএলবিসি (স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কারস কমিটি)-কে জানিয়েছেন। কিন্তু শুকনো আশ্বাস ছাড়া কিছু জোটেনি।

এসএলবিসি সূত্রের খবর, কেন ব্যাঙ্ক মিত্রদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না, তা সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থাই বলতে পারবে। ওই ঠিকা সংস্থার দাবি, দু’টি ব্যাঙ্কের মিশে যাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে ইউনাউটেড ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্ক মিত্রদের কী ভাবে বেতন দেওয়া হবে সে ব্যাপারে কিছু পদ্ধতিগত জটিলতা ছিল। ফলে, শুধু এই দুই জেলাই নয়, সারা দেশেই ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্ক মিত্রদের বেতন বকেয়া হয়ে গিয়েছে।

সংস্থার আরও দাবি, সমস্যা মিটেছে। সংস্থার তরফে হাওড়া এবং হুগলির দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘হুগলির ব্যাঙ্ক মিত্রেরা দু’এক দিনের মধ্যেই বেতন পাবেন। হাওড়াতে বেতন দেওয়া হবে এক সপ্তাহের মধ্যে।’’

কী কাজ ব্যাঙ্ক মিত্রদের?

একটি বা একাধিক পঞ্চায়েতে যে ব্যাঙ্কের কাজ করার জন্য তাঁরা বহাল হন, সেই ব্যাঙ্কের তরফ থেকে পরিষেবা দিতে হয় তাঁদের। তাঁদের নিজেদের একটি অফিস খুলতে হয়। সেখানেই তাঁরা কাজ করেন। অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে টাকার লেনদেন, ঋণ দেওয়া, ঋণ আদায় সব রকম কাজই করতে হয়। ঋণ আদায়ের উপরে তাঁদের কমিশন দেওয়া হয়। এ ছাড়া, বেতন মেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন