রেল ও পূর্ত (সড়ক) দফতরের উদ্যোগ, কাজ বাকি সামান্যই

উলুবেড়িয়ায় উড়ালপুলের আশা মার্চেই

উলুবেড়িয়ার রেলসেতুটি তৈরি হচ্ছে রেল এবং পূর্ত (সড়ক) দফতরের যৌথ উদ্যোগে। আগে নিয়ম ছিল, যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোনও সেতুর যে অংশ রেলের আওতায় পড়ে, তার কাজ করবে রেল।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১২
Share:

সমাধান: দ্রুত গতিতে চলছে উড়ালপুল তৈরি।

ট্রেন যাবে একের পর এক, তাই রেলগেট পড়ে থাকে প্রায় আধ ঘণ্টা— দু’পাশে গাড়ির সারি, রাস্তায় যানজট। ছবিটা বদলে যেতে পারে আর ক’দিনের মধ্যেই। অপেক্ষা শুধু সমন্বয়ের।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর ডিভিশনে উলুবেড়িয়া লেভেলক্রসিং-এর উপরে উড়ালপুল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। রেল ও পূর্ত (সড়ক) দফতরের মধ্যে বোঝাপ়ড়া হলে মার্চেই শুরু হয়ে যেতে পারে যান চলাচল। রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সেতুর দু’পাশের রাস্তা জোড়ার জন্য পূর্ত দফতর আট ঘণ্টা করে পাঁচদিন রেল চলাচল বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। পরে টানা ১৪ ঘণ্টা রেল চলাচল বন্ধ রাখার প্রস্তাব পাঠায় পূর্ত দফতর। তাতেও রেল রাজি হতে পারেনি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয়কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘টানা ৪-৫ ঘণ্টার বেশি রেল চলাচল বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। আমরা জানিয়েছি, দু’তিন দিন কিছুক্ষণ করে রেল চলাচল বন্ধ রাখা যেতে পারে। কিন্তু তারপর রাজ্য সরকার আর কিছু জানায়নি।’’ রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাওড়া ডিভিশনের কর্তারা জানিয়েছেন নতুন প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উলুবেড়িয়ার রেলসেতুটি তৈরি হচ্ছে রেল এবং পূর্ত (সড়ক) দফতরের যৌথ উদ্যোগে। আগে নিয়ম ছিল, যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোনও সেতুর যে অংশ রেলের আওতায় পড়ে, তার কাজ করবে রেল। বাকিটা রাজ্যের দায়িত্ব।

Advertisement

কিন্তু ২০১০ সাল থেকে সে নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। এখন যৌথ উদ্যোগে তৈরি হলেও পুরো কাজ করে যে কোনও একপক্ষ। রেল কাজ করলে রাজ্য সরকারকে তার ভাগের টাকা দিতে হয়, আবার রাজ্য কাজ করলে রেল দেয় তার ভাগের টাকাটুকু। উলুবেড়িয়ার সেতু তৈরি করছে পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগ। ফলে রেল শুধু বরাদ্দ অর্থটুকু দিয়ে দিয়েছে।

উলুবেড়িয়া ওয়েস্ট লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে যানজট।

৫৬১ মিটার লম্বা সেতুটির ৬১ মিটার রয়েছে রেলের অংশে। প্রায় ৪০ কোটি টাকা মোট খরচের মধ্যে প্রায় ১০ কোটি টাকা দিচ্ছে রেল। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ, বাকি শুধু রেল ‌লাইনের উপরে সেতুর দুই দিক জোড়ার কাজ।

উলুবেড়িয়ায় লেভেলক্রসিং-এর উপরে উড়ালপুলের দাবি বাসিন্দারা দীর্ঘদিনের। টাকার অভাবে সেতু নির্মাণ করা যাচ্ছিল না বলে দাবি পূর্ত দফতরের। পরে সেতুর জন্য রাজ্যকে টাকা দিতে রাজি হয় কেন্দ্রীয় সড়ক ও জাহাজ পরিবহণ দফতর। ২০১৫ সালের শেষ দিকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বাণীতবলা থেকে শুরু হয়ে উড়ালপুলটি লেভেলক্রসিং পার হয়ে গঙ্গারামপুর ওটি রোডে মিশছে।

কলকাতা, হাওড়া, উদয়নারায়ণপুর, আমতা, বাগনান থেকে উলুবেড়িয়া শহরে ঢুকতে হলে পার হতে হয় লেভেলক্রসিং। হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগে ঘন ঘন ট্রেন থাকায় দীর্ঘক্ষণ রেলগেট পড়ে থাকে। ফলে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া আদালত, মহকুমাশাসকের কার্যালয় এমনকী গড়চুমুক ও গাদিয়াড়া পর্যটনকেন্দ্রে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। আবার অনেক সময় দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় ট্রেনও। দুর্ঘটনাও ঘটে আকছা়র। সেই সমস্যার সমাধান এ বার হবে বলেই আশা স্থানীয় বাসিন্দাদের।

তবে একাংশের আশঙ্কা, উড়ালপুল চালু হলে চাপ বাড়বে ওটি রোডে। তখন যানজটে নাকাল হতে হবে ওই রাস্তায়। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায় বলেন, ‘‘ওটি রোডের সমান্তরালে বাইপাস রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে।’’

ছবি: সুব্রত জানা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন