ক্রমশ বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা
Dengue

মশা নিধনের আশ্বাস উত্তরপাড়া পুরসভার

পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি জ্বর প্রতিরোধে। পুরসভার হাসপাতাল মহামায়াতে বিনামূল্যে ডেঙ্গি পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৭
Share:

দাওয়াই: পুরসভার পক্ষ থেকে চলছে তেল ছড়ানো। নিজস্ব চিত্র

একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরসভাগুলিকে হুঁশিয়ারি, আর বিকেলেই পুরসভায় খবর আসে একটি ওর্য়াডে অন্তত ১৮ জনের জ্বর। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মঙ্গলবার রাতেই মশা নিধনে নামলউত্তরপাড়া পুরসভা। সামিল হলেন খোদ পুরপ্রধানও ।

Advertisement

প্রায় এক মাস ধরে উত্তরপাড়া পুরসভায় বিচ্ছিন্নভাবে হলেও ২৪টি ওর্য়াডের নানা এলাকায় জ্বর ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি হানা দিয়েছে ডেঙ্গিও। পুরসভার নিজস্ব হাসপাতালেও ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এতদিন লাগোয়া শ্রীরামপুর এবং রিষড়ায় জ্বরের খবর মিলছিল। কিন্তু প্রাণঘাতী জ্বর ক্রমশই এলাকায় ছড়ানোয় চিন্তিত সাধারণ মানুষজন।

পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি জ্বর প্রতিরোধে। পুরসভার হাসপাতাল মহামায়াতে বিনামূল্যে ডেঙ্গি পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরপাড়ায় যেমন জ্বর হচ্ছে পাশাপাশি বালি, বেলুড়, ডানকুনি, চণ্ডীতলা এলাকা থেকেও উত্তরপাড়ায় চিকিৎসা করাতে বহু মানুষ আসছেন। চাপ বাড়ছে।’’

Advertisement

উত্তরপাড়ার লরেন্স স্ট্রিট, স্টেশন লাগোয়া ভার্মা ফ্ল্যাট সংলগ্ন এলাকা, উত্তরপাড়া জিটি রোড সংলগ্ন টিপটপ, মালিকপাড়া এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলছে। অনেকেই উত্তরপাড়া জেনারেল এবং পুরসভার হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। স্থানীয় চিকিৎসকদের চেম্বারেও অনেকেই জ্বর নিয়ে আসছেন। চিকিৎসক ঐশ্বর্যদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি দিনে পাঁচটা করেও ডেঙ্গির রোগী পাচ্ছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’জনকে পেয়েছি। পুরসভা সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। পুরসভা দরিদ্রদের জন্য ডেঙ্গি পরীক্ষা বিনা পয়সায় করায়, খুব সুবিধা হয়েছে।’’

পুরসভা অভিযানে নামলেও কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরসভার নর্দমাগুলিই এখম মশার প্রধান আঁতুড়ঘর। প্লাস্টিক এবং পানীয়ের বোতল যথেচ্ছভাবে নিকাশি নালায় আটকে পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। অথচ উত্তরপাড়া পুরসভাই কিন্তু প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের মধ্যে পুরস্কার এনেছিল। শুধু নর্দমা নয়, পুরসভার এক একটি জায়গায় রাস্তার ধারে ময়লা পড়ে থাকে পুরকর্মীদের নজর এড়িয়ে। চলতি বর্ষায় বহু জায়গাতেই ফাঁকা জমিতে প্রচুর জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। তার ফলে মশার উৎপাত বাড়ার পক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। জমির মালিকেরা কোনও ভ্রুক্ষেপ করেন না সেই সব নিয়ে।

বিষয়টি অস্বীকার করেননি পুরপ্রধান। তিনি বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের উৎপাত বেড়েছে পুর এলাকায়। কিন্তু উত্তরপাড়ায় শিক্ষিত মানুষের বাস। এখানে এলাকায় মানুষেরও সচেতনতা জরুরি। শুধু পুরসভার উপর দায় চাপানো ঠিক নয়। আমাদের কর্মীরা তো বাড়ি বাড়ি নিয়মিত যান ময়লা নিতে। এরপরও কেন প্লাস্টিকে বোঝাই হবে নর্দমা? এ বার নর্দমা আর রাস্তায় ময়লা ফেললে জরিমানা চালু করব পুর এলাকায়।’’

পুর কর্তৃপক্ষের, সমস্ত ওর্য়াডের কাউন্সিলরদের রাস্তায় নামতে বলা হয়েছে। পুরসভার তরফে মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। মশা মারতে কামান ও ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। পুরসভার আশা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement