ভাসল হাওড়া, মৃত্যু কিশোরের

বর্ষার প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই ভাসল হাওড়া। আর জমা জলে পণ্ড হয়ে গেল ইদের আগের শেষ মঙ্গলাহাট। শুধু তা-ই নয়, পুরসভারই খুঁড়ে রাখা একটি জলাধারে পড়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

পণ্ড: ভেসে গেল মঙ্গলাহাটের বিকিকিনিও। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বর্ষার প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই ভাসল হাওড়া। আর জমা জলে পণ্ড হয়ে গেল ইদের আগের শেষ মঙ্গলাহাট। শুধু তা-ই নয়, পুরসভারই খুঁড়ে রাখা একটি জলাধারে পড়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বিনোদ মল্লিক (১৫)। বাড়ি হাওড়া পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের মহীনাথ পোড়েল লেনে। অভিযোগ, সম্পূর্ণ অরক্ষিত ওই জলাধারের জল আর রাস্তার জমা জল এক হয়ে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। যার প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে কার্যত বেহাল হয়ে পড়ে হাওড়ার অপেক্ষাকৃত নিচু ওয়ার্ডগুলি। জল জমে যায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস লেন ও বেলিলিয়াস রোড-সহ ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের চার্চ রোড, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহীনাথ পোড়েল লেন এবং মধ্য ও উত্তর হাওড়ার অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলি। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সেই জল নামেনি। মেট্রোর কাজের জন্য নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এ দিনও চার্চ রোড প্রায় আট-দশ ইঞ্চি জলের তলায় ছিল। তাই সেখানে মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা বসতে পারেননি। যাঁরা বসেছিলেন, তাঁদের বিক্রিবাটাও ভাল হয়নি।

জমা জলের জন্য এ দিন সব থেকে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে সালকিয়ার মহীনাথ পোড়েল লেনে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার পাশে নর্দমায় প্রস্রাব করতে গিয়েছিল বিনোদ মল্লিক নামে এক কিশোর। বৃষ্টির জল জমে যাওয়ায় রবিবার রাত থেকেই ওই এলাকার পুকুর-নর্দমা-রাস্তাঘাট সব এক হয়ে গিয়েছিল। পুরসভা সূত্রে খবর, জল জমার সমস্যা কমাতে ওই জায়গায় একটি পাম্প হাউস তৈরি করা হয়েছে। যদিও তা চালু হয়নি। পাশেই গর্ত খোঁড়া হয়েছিল একটি জলাধার তৈরির জন্য।

Advertisement

এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টিতে ওই জলাধার ভরে গিয়ে রাস্তা ও নদর্মার সঙ্গে মিশে যায়। বিনোদ তা বুঝতে না পেরে ওই জলাধারে পড়ে ডুবে যায়। এলাকার বাসিন্দা বাপ্পা দাস বলেন, ‘‘পাম্প হাউস চালু থাকলে হয়তো এই ঘটনা ঘটত না। জলাধারে এত জল থাকত না।’’ ওই জলাধারের কোনও রেলিং নেই।

বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতেই এমন হাল দেখে হাওড়াবাসী পুরসভার দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজার কথা বললেও পুরসভা আদৌ কিছু করেনি। নর্দমা থেকে নিয়মিত পাঁক না তোলাতেই এই অবস্থা।

মেয়র রথীন চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘এ বার বেশ কিছু জায়গায় জল জমলেও তাড়াতাড়ি নেমে গিয়েছে। তবু কোথাও কোথাও কেন জল জমে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছি। কয়েক জায়গায় নিকাশির কাজ চলছে। নিয়মিত নর্দমার পলি তোলাও চলছে। দিন দশেকের মধ্যে অবস্থার অনেক উন্নতি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন